ক্যাটাগরি

মিরপুরের ১০ বধ্যভূমি সংরক্ষণের দাবি

মিরপুর
মুক্ত দিবস উপলক্ষে রোববার এক ওয়েবিনারে এ
দাবি তুলে ধরা হয় বলে নির্মূল
কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে
জানানো হয়।

কমিটির
সভাপতি শাহরিয়ার কবির ওয়েবিনারে তার প্রারম্ভিক বক্তব্যে বলেন, “নির্মূল কমিটি দীর্ঘকাল যাবৎ মিরপুরের বিশাল বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের দাবি জানাচ্ছে। এসব বধ্যভূমিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের অবাঙালি দোসরদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিবরণ বাহাত্তরে জাতীয় গণমাধ্যমসমূহে প্রকাশিত হয়েছে।

“মিরপুরের
অধিকাংশ বধ্যভূমি বেদখল হয়ে গেছে। এগুলো দখলমুক্ত করে জল্লাদখানা বধ্যভূমির মত সংরক্ষণ করার
জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।”

নয়
মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের
১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করলেও কিছু পরাজিত পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ না করে অবস্থান
নেয় ঢাকার মিরপুরের অবাঙ্গালি অধ্যুষিত এলাকায়।

দেড়
মাস পর ১৯৭২ সালের
৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী মিরপুরে অভিযান চালায়। পরদিন মুক্ত হয় মিরপুর।

মিরপুর
মুক্ত করতে গিয়ে শহীদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা
লেফটেন্যান্ট সেলিম, পুলিশের ডিএসপি লোধীসহ সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর
শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা। সাহিত্যিক সাংবাদিক শহীদুল্লা কায়সারকে খুঁজতে ওই এলাকায় গিয়ে
নিখোঁজ হন চলচ্চিত্র নির্মাতা
ও কথাশিল্পী জহির রায়হান।

মিরপুরের
যুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর ৩১ জানুয়ারি মিরপুর
মুক্ত দিবস পালন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

একাত্তরের
ঘাতক দালাল চক্র এখনও ‘প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে’ অবস্থান করছে মন্তব্য করে শাহরিয়ার কবির বলেন, “তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে অপসারণ না করলে আমাদের
মুক্তিযুদ্ধের যাবতীয় অর্জন ধ্বংস হয়ে যাবে।”

শিল্প
প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, “মিরপুরে অনেক বছর পরেও বাড়িঘর, মসজিদ নির্মাণ করতে গিয়ে শহীদের কঙ্কাল পাওয়া গেছে। মিরপুরকে এক খণ্ড পাকিস্তানে
পরিণত করে রেখেছিল ঘাতকরা। এখনও মিরপুরকে অনেকে মিনি পাকিস্তান বলে থাকে। এই অপবাদ আমাদের
ঘোচাতে হবে।

“মিরপুরের
নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধ নগর বা এ ধরনের
কিছু আমরা করতে পারি কিনা, সেটি ভেবে দেখতে হবে। নিহতদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হওয়া দরকার। আমি মনে করি- মিরপুরের নামটি পরিবর্তন করে ‘মুক্তিযুদ্ধ নগর’ করা যেতে পারে, আমি নিজেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব।”

দিনটি
উপলক্ষে সকালে জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে ফুল দিয়ে মিরপুরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

অন্যদের
মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সহ-সভাপতি শহীদজায়া
শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক হারুণ হাবীব, চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সাংবাদিক জুলফিকার আলি মানিক, শহীদ বুদ্ধিজীবী জহির রায়হানের পুত্র অনল রায়হান, শহীদ সাংবাদিক আবু তালেবের ছেলে খন্দকার আবুল আহসান এবং নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল ওয়েবিনারে অংশ নেন।