ঠিকাদার ‘কাজের প্রয়োজনে পাহাড় কাটার’ কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু এলজিইডি পাহাড় কাটার দরকার নেই বলে জানিয়েছে।
জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তালেব চৌধুরী বলেন, “আমরা ঠিকাদারকে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ দিয়েছি। পাহাড় কাটার কথা না। পাহাড় কাটার দায় তার।
তিনি বলেন, সড়কটি ২৪ ফুট চওড়া। তার মধ্যে ১২ ফুট পিচ ঢালাই। ১২ ফুটের সঙ্গে দুই পাশে তিন ফুট করে আরও ছয় ফুট পিচ ঢালাই করার কাজ দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারকে। পাশে নালা করার জন্যও ২৪ ফুটের বাইরে যাওয়ার কথা না। পাহাড় কাটারও কথা না। তবে পাহাড়ধসের কারণে কিছু মাটি সড়কের ওপরে চলে আসায় সেসব কেটে সমান করতে হয়েছে।
সড়ক সম্প্রসারণে কাজ করছে রাঙামাটি ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক নিজাম মিশু বলেন, “সড়ক সম্প্রসারণের প্রয়োজনে কিছু পাহাড়ে হাত দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে ৪০-৪৫ টি পাহাড়ের কিছু অংশ কাটতে হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই সরকারি। যেগুলো ব্যক্তিগত সেগুলোর মালিকদের সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিয়ে কিংবা আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে কাটা হয়েছে।”
সড়কটির একপাশে সবুজ পাহাড় আর অন্যপাশে কাপ্তাই হ্রদের নীল জলরাশি এলাকাবাসীর যেমন প্রিয় তেমনি এর আকর্ষণেই রাঙামাটি আকর্ষণী পর্যটন কেন্দ্র। এই সড়কটি সেই আকর্ষণ আরও বাড়িয়েছে। এলাকাবাসী ভালবেসে এর নাম দিয়েছে ‘মুগ্ধতার সড়ক’। সড়ক ধরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন হোটেল-রিসোর্ট। এ অবস্থায় পাহাড় কাটার কারণে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রাঙামাটির প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক সংবাদের পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি সুনীল কান্তি দে বলেন, “রূপবৈচিত্র্যের কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা সড়কটিতে এভাবে পাহাড় কাটার কোনো মানে নেই। এর ফলে সড়কটি রূপ হারিয়েছে। সম্প্রসারণ করে যদি সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলা হয়, সেই কাজের কী দরকার?”
সড়ক সম্প্রসারণ করতে গিয়ে যেন এর সৌন্দর্য স্থায়ীভাবে নষ্ট না হয় সেদিকে নজর দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।