ক্যাটাগরি

অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক ৫ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ

ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, অর্পিত
সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলোর যথাযথ সংশোধন প্রস্তাব দেওয়া হবে যেন পরবর্তীতে
আর এ বিষয়ে সমস্যার সৃষ্টি না হয়।

ভূমি মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়,
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১ এর অধিকতর
সংশোধনী’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমি সচিব এ কথা বলেন।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার অতিরিক্ত সচিব
মুহাম্মদ সালেহউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় ১৯ জন অংশগ্রহণকারী চারটি পৃথক
দলে ভাগ হয়ে অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক পাঁচটি সমস্যার সমাধান প্রস্তাব তৈরি ও উপস্থাপনা
করেন।

ভূমি মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়,
অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন, ২০০১ এর উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকালে চিহ্নিত সমস্যাগুলো
হচ্ছে –

>> অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালের
বিচারক হিসেবে জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজের কিছু সিদ্ধান্ত বা রায় আইনগত কারণে পরবর্তী
আপিলের সুযোগ হতে বঞ্চিত রয়েছে।

>> প্রকাশিত প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তির
(‘ক’ lতফশিল) তালিকায় কিছু ভুল হওয়া এবং কিছু সম্পত্তি বাদ পড়ে যাওয়ায় জনস্বার্থে প্রকাশিত
তালিকার সংশোধনী এবং বাদ পড়া সম্পত্তির তালিকা প্রকাশের প্রয়োজন রয়েছে। এ ধরনের সংশোধন
ও তালিকা প্রকাশের সময়সীমা ২০১৪ সালে শেষ হয়েছে।

>> প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তিতে আইনের
ধারা ১০ এর বিধান মোতাবেক দাবিদাররা দাবির আইনগত সময়সীমা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ২০১৩ সালের
ডিসেম্বর এবং সংশোধনী তালিকার ক্ষেত্রে ২০১৪ শেষ হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক দাবিদার দাবি
করতে পারছে না।

>> বিদ্যমান আইনের ধারা ১৮ এর উপধারা
(৪) অনুযায়ী সিদ্ধান্ত বা রায় প্রদানের ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে আপিলের বিধান রয়েছে।
এক্ষেত্রে বিলম্বে রায় দেওয়ায় বা আদেশের সার্টিফায়েড কপি বিলম্বে দেওয়ায় আইন অনুযায়ী
৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে আপিল করা সম্ভব হয় না।

>> বিদ্যমান আইনের ধারা ২৬ এর বিধান
অনুযায়ী অদাবীকৃত এবং দাবি অপ্রমাণিত সম্পত্তিকে সরকারি সম্পত্তি বলা হয়েছে। কিন্তু
ওই সরকারি সম্পত্তির রেকর্ড সংশোধন ও নিষ্পত্তির বিষয়ে স্পষ্ট বিধান নেই।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, ১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের
মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে যারা পাকিস্তান ত্যাগ করে ভারতে গিয়ে বসবাস করছিল তাদের পরিত্যক্ত
সম্পত্তি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার শত্রু সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭৪ সাল থেকে
শত্রু সম্পত্তির নতুন নাম দেওয়া হয় অর্পিত সম্পত্তি।

অর্পিত সম্পত্তি হিসাবে তালিকাভুক্ত সম্পত্তিগুলো
বৈধ মালিকদের কাছে প্রত্যর্পণের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের জটিলতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রথম মেয়াদে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১’
প্রণয়ন করা হয়।

পরবর্তীতে অর্পিত সম্পত্তি আইনানুগভাবে প্রকৃত
মালিককে প্রত্যর্পণের জন্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন অর্পিত সম্পত্তি ‘ক’ তালিকার গেজেটে
এবং অন্যান্য অর্পিত সম্পত্তি ‘খ’ তালিকার গেজেটে প্রকাশ করা হয়।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, স্বল্প সময়ের মধ্যে
এ বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করতে গিয়ে ক্ষেত্রভেদে প্রকাশিত গেজেটে কিছু ভুল-ত্রুটি
থেকে যায় এবং ক্ষেত্রভেদে কিছু প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তি প্রকাশিত গেজেটে বাদ পড়ে যায়।

প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তির বাদপড়া ও সংশোধনী
তালিকার গেজেট প্রকাশের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা একাধিকবার আইন সংশোধনের মাধ্যমে বৃদ্ধি
করে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়।

আইন সংশোধনের মাধ্যমে বর্ধিত সময়সীমার (২৬
ফেব্রুয়ারি ২০১৪) মধ্যে কিছু প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তি বাদপড়া ও সংশোধনী তালিকার গেজেট
প্রকাশের বাইরে থাকে।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, একাধিকার বাদপড়া ও
সংশোধনী তালিকার গেজেট প্রকাশের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা বৃদ্ধি করা হলেও প্রায়ই ত্রুটি-বিচ্যুতির
প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট সেবাগ্রহীতা ও বৈধ মালিকরা যেন অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক
সমস্যায় দ্রুত সমাধান পেতে পারেন সেজন্য আইনে আরও কিছু সংশোধনী আনার কাজ প্রক্রিয়াধীন
আছে।