মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই সাজেদুল হক আসামি নেহাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন জানান।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- মর্তুজা রায়হান চৌধুরী (২২), নুহাত আলম তাফসীর (২১), সাফায়েত জামিল বিশাল (২৪) ও আরাফাত (২৮)।
এদের মধ্যে প্রথম তিনজন কারাগারে আছেন এবং আরাফাত মারা গেছেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ২৮ জানুয়ারি রাতে ইউল্যাবের শিক্ষার্থী এক তরুণী তার বন্ধু মর্তুজা তাকে স্কুটিতে করে লালমাটিয়ায় তাদের বন্ধু আরাফাতের বাসায় নিয়ে যান।
সেখানে স্কুটি রেখে তিনজন মিলে একটি গাড়িতে করে উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় যান। তাদের বান্ধবী নেহা এবং অপর এক ছেলে বন্ধু সেখানে আগে থেকে অবস্থান করছিল। এই পাঁচজন মিলে একসঙ্গে ‘মদ্যপান করেন’।
নেহা ও তার সঙ্গে থাকা ছেলে বন্ধু প্রথমে চলে যান। পরে ওই তরুণী, রায়হান ও আরাফাত একসঙ্গে বের হন। আরাফাত গুলশানে নেমে গিয়ে সেখান থেকে মাওয়ায় গিয়ে আরেকটি পার্টিতে যোগ দেন।
মিরপুরের ওই তরুণীর আড্ডার সঙ্গী নেহা গ্রেপ্তার
মোহাম্মদপুরের ধর্ষণ মামলা: সেই তরুণীর আরেক বন্ধুর মৃত্যু
ওই তরুণীকে নিয়ে রাতে মোহাম্মদপুরে তাদের আরেক বন্ধু নুহাতের বাসায় উঠেন মর্তুজা। সেখানে ওই তরুণী বেশ কয়েক বার বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই বাসায় তরুণীকে রায়হান ধর্ষণ করেন বলে তরুণীর বাবার দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
পরদিন শুক্রবার মেয়েটির কোনো চিকিৎসা হয়নি। শনিবার ভোরে ওই বাসা থেকেই তাকে ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বেলা ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলেন, তদন্তে জানা গেছে আরাফাত উত্তরায় মদ্যপান করার পর আরেকটি পার্টিতে মাওয়া গিয়েছিলেন।
পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই তার মৃত্যু হয় এবং কাউকে না জানিয়ে স্বজনরা রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, ওই তরুণীর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন, ঘটনার বিষয়ে চাহিদা মোতাবেক তথ্য সংগ্রহ এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে আসামিকে নিয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য রিমান্ড চান তদন্ত কর্মকর্তা।
অন্যদিকে নেহার পক্ষে অ্যাডভোকেট খায়রুল ইসলাম লিটন রিমান্ড বাতিল চেয়ে প্রয়োজনে হলে তাকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন।
এর আগে মামলাটিতে বৃহস্পতিবার সাফায়েত আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করে। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।