তিনি বলেছেন, “অ্যাকচুয়াল যুগ হোক আর ভার্চুয়াল যুগ হোক, উভয় ক্ষেত্রেই গ্রন্থাগার লাগবে। পড়ার জন্য একটা পরিবেশ লাগে, মন- মানসিকতা লাগে। আর সেই পরিবেশ পাওয়া যায় গ্রন্থাগারে। দেশে গ্রন্থাগারের অনেক সম্প্রসারণ হয়েছে,
সেটা প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্প্রসারণ করতে হবে।”
শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় জাতীয় গ্রন্থাগার অধিদপ্তর মিলনায়তনে চতুর্থ জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় কথা বলছিলেন তাজুল ইসলাম।
‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, ঘরে ঘরে গ্রন্থাগার’ প্রতিপাদ্যে বিকালে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর প্রাঙ্গণে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে গ্রন্থাগার দিবসের উদ্বোধন করেন
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
আলোচনা সভায় তাজুল ইসলাম বলেন, “শুধু পড়লেই হবে না, আমি একটা জিনিস পড়ে ফেললাম, আর এর কনটেন্ট সম্পর্কে কিছুই জানলাম না, তা হয় না। ভালোভাবে পড়ার জন্য ভালো পরিবেশের দরকার হয়। আর এজন্যই লাইব্রেরির আবেদন কখনো শেষ হবে না।”
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি বলেন,
“অ্যারিস্টটল বলেছিলেন, ‘যারা জানে তারা কাজ করে, কিন্তু যারা শেখায় তারা বোঝে।’ আর এই বোঝানোর কাজটি করে গ্রন্থাগার। বই পড়ার মাধ্যমে একটি চিন্তার জগত সৃষ্টি হয়। আর এই জগত সৃষ্টিতে সহায়তা করে গ্রন্থাগার।
“আমরা বই কেন পড়ব। বই আসলে জীবনের আনন্দ, জীবনের বিকাশ, জ্ঞানের বিকাশ সবকিছুর জন্যই। এমনকি আমরা যদি বিশ্বের সকল ধর্মের দিকে তাকাই. তাহলে দেখতে পাব সকল ধর্মের কেন্দ্রবিন্দু হল এই বই।”
সিমিন হোসেন রিমি বলেন, “আমাদের সময় স্কুলে স্কুলে লাইব্রেরি ছিল, সেখান থেকে বই নেওয়া যেত। আবার এক সপ্তাহ পর তা ফেরত দিতে হত। কিন্তু আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে স্কুল লাইব্রেরিগুলো যেন হারিয়ে গেছে। আমাদেরকে এই স্কুল পাঠাগারের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে।”
অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন,
“গ্রন্থাগার কখনোই অবকাঠামো এবং বই-পুস্তকের সংগ্রহ নয়। গ্রন্থাগার সৃজনশীল জীবনের চলার ভাষ্য। একটি গ্রন্থাগার কত বিচিত্র ধরনের, কত অসংখ্য কালের, কত রকমের অনুভবের সংগ্রহ নিয়ে পাঠকের জন্য অপেক্ষা করে, তা ভেবে বিস্ময়ের শেষ থাকে না।
“এককালে বিধ্বংসী মারণাস্ত্র শক্তি মাত্রার সূচক ছিল, কিন্তু আজ যে কোনো বিবেকবান মানুষ শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি হিসেবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারতাকেই বিবেচনা করে। এই জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যতম বাহন হল গ্রন্থাগার।”
হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, “আজ দেশের তরুণরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। দেশের তরুণদের এসব থেকে দূরে রাখতে গ্রন্থাগারের বিকল্প নেই। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর লেখা বইগুলো মনোযোগের সাথে পড়লে দেখা যায়, তিনি কীভাবে কারাগারকে গ্রন্থাগার হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন।”
গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.আবুবকর সিদ্দিক অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।