ক্যাটাগরি

করোনাভাইরাসের টিকা ‘খুবই নিরাপদ’

২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত টিকা নেওয়া প্রায় ৭০ লাখ মানুষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখার পর যুক্তরাজ্যের ‘মেডিসিনস এন্ড হেলথকেয়ার প্রডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি’ (এমএইচআরএ) শুক্রবার ফাইজার-বায়োএনটেক এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্র্যাজেনেকার টিকার নিরাপত্তার এ নিশ্চয়তা দিয়েছে।

৯ ডিসেম্বর থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত টিকা নেওয়াদের ২২,৮২০ জন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন; যা টিকা নেওয়া প্রতি ১ হাজার জনে তিনজন। তবে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কোনওটিই গুরুতর নয়, বরং টিকা নেওয়ার স্থান ফুলে যাওয়া কিংবা ফ্লুর মতো সামান্য উপসর্গ বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এরই মধ্যে নতুন আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে,অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা করোনাভাইরাসের নতুন ‘কেন্ট’ ধরনের ক্ষেত্রে বেশ ভাল সুরক্ষা দেয়। অতি সংক্রামক এই ধরনটিই এখন যুক্তরাজ্যে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে।

টিকাকে করোনাভাইরাস মহামারী থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হিসাবে দেখা হচ্ছে এবং এ পর্যন্ত নানা গবেষণায় টিকা নিরাপদ এবং কার্যকর বলেই প্রমাণ পাওয়া গেছে।

যদিও লন্ডনের কিংস কলেজের ‘জো এ্যাপ’ গবেষক দলের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ বিশেষত, স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর চালানো এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে, টিকার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে, তবে তা খারাপ কিছু নয়।

সবচেয়ে সাধারণ যে উপসর্গ দেখা গেছে তা হল, ইনজেকশন দেওয়ার স্থানে ব্যথা। টিকার সঙ্গে শরীর মানিয়ে নেওয়ার সময়ে এই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কোভিড টিকায় করোনাভাইরাস নেই। ফলে টিকা নিয়ে কেউ রোগাক্রান্ত হওয়ার ভয়ও নেই।

টিকার মাধ্যমে মূলত দেহকে ভাইরাসের একটি নিরাপদ সংস্করণের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এতে সত্যিকারের ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় মানবদেহ।

জানুয়ারির প্রথমদিক পর্যন্ত যারা ফাইজার-বায়োএনটেকের অন্তত এক ডোজ কোভিড টিকা নিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে একটি অ্যাপের মাধ্যমে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে তথ্য নিয়েছেন গবেষকরা।

টিকা গ্রহণকারীদের ৩৭ শতাংশ জানিয়েছেন, প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর তারা সেই জায়গায় ব্যথা অনুভব করেছেন এবং জায়গাটি ফুলেও গেছে। দ্বিতীয় ডোজ টিকা যারা নিয়েছেন,তাদের ক্ষেত্রে এই হার বেড়ে হয়েছে ৪৫ শতাংশ।

মাত্র ১৪ শতাংশ টিকা গ্রহণকারীর ক্ষেত্রে প্রথম ডোজ নেওয়ার একসপ্তাহের মধ্যে জ্বর, সারা শরীরে ব্যথা এবং গা শিরশির করার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার পর এই হার বেড়ে ২২ শতাংশ হয়েছে। এইসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে কয়েকদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠা যায় বলে জানিয়েছে ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

বিবিসি জানায়, ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড টিকা নিলে কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর এ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তবে তা খুবই বিরল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, টিকা নেওয়া ১ লাখ মানুষের মধ্যে এক বা দু’জনের ক্ষেত্রে এমন ঘটতে পারে।

ডাক্তাররা অবশ্য ইতোমধ্যেই বলেছেন যে, যাদের গুরুতর এ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা নেওয়া উচিত হবে না।

ব্রিটিশ ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, টিকা নিয়েছেন এমন কয়েকলাখ মানুষের মধ্যে ১৪৩ জন মারা যাওয়ার রেকর্ডও আছে। কিন্তু এসব মৃত্যু নিয়ে ভয় বা দুশ্চিন্তার কিছু নেই এবং এই মৃত্যু কোনওভাবেই টিকা নেওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।