স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রোববার সকাল ১০টা মহাখালী স্বাস্থ্য ভবনে ভার্চুয়ালি টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
তার আগেই সকাল ৯টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) টিকা নেন সুপ্রিম কোর্টের তিনজন বিচারক।
আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথম টিকা নেন দীপংকর ঘোষ নামে একজন চিকিৎসক।
প্রথম দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে ১০১৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ৫০টি কেন্দ্র। সোমবার থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এসব কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে।
ঢাকায় ২০৪টি এবং ঢাকার বাইরে ২ হাজার ১৯৬টি স্বাস্থ্যকর্মীদের দল এসব কেন্দ্রে সরাসরি টিকাদানে নিয়োজিত রয়েছেন।
ধারাবাহিকভাবে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মোট ৭ হাজার ৩৪৪টি দল প্রস্তুত করা হয়েছে।
টিকা নিতে আগ্রহী সবাইকেই আগে নিবন্ধন করতে হচ্ছে। শনিবার পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন তিন লাখের বেশি মানুষ।
কোভিড-১৯: টিকা দিতে প্রস্তুত ১০১৫ কেন্দ্র
দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরুর পর রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা দেওয়া হচ্ছে একজনকে। ছবি: কামাল তালুকদার
ঢাকা মেডিকেল কলেজে টিকাদান শুরুর পর হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, তার হাসপাতালে টিকা নিতে তিন হাজারের বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছে।
রোববার সেখানে চারশ থেকে পাঁচশ জনকে টিকা দেওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নাজমুল হক জানান, ঢাকা মেডিকেলে চারটি বুথের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিকা দেওয়ার পর ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে সবাইকে।
কারও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেলে সেজন্যও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও দেখা যায়নি বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারাও এদিন করোনা ভাইরাসের টিকা নিচ্ছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, দুপুরের পর শেরেবাংলানগর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে তিনি নিজে এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ ১১ কর্মকর্তা টিকা নিয়েছেন।
বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা। সবাইকে এ টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে।
এই টিকার তিন কোটি ডোজ পেতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের, যার মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ হাতে পাওয়ার পর জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে আগেই। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা।
কোভিড-১৯: নার্স রুনুর জয়বাংলা ধ্বনিতে বাংলাদেশে টিকাযজ্ঞ শুরু
মানুষের ভয় কাটাতে টিকা নিলেন ‘ভিআইপিরা’
টিকাদান পরিকল্পনায় পরিবর্তন, প্রথম মাসে দেওয়া হবে ৩৫ লাখ ডোজ
টিকাদান কেন্দ্রেও নিবন্ধন করা যাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ জানুয়ারি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। সে সময় দুই দিনে মোট ৫৬৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ না হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী তাদের এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করা হয়। কারও মধ্যে গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না যাওয়ায় পরিকল্পনা মত রোববার গণ টিকাদান শুরু হল।
এই টিকা নিরাপদ এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
জাতীয়ভাবে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতি পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিন ভাগে (ফেইজ) মোট পাঁচ ধাপে এসব টিকা দেওয়া হবে। কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধে সামনের কাতারে থাকা মানুষ প্রাধান্য পাবেন।