শনিবার দুইজনকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আন্ডারসেক্রেটারি বা সহকারী সচিব পদে। তাদের একজন ফরাসি নারী নাতালি বেকা।
এই নিয়োগের মধ্য দিয়ে পোপকে পরামর্শ দেওয়াসহ চার্চের বিতর্কিত কিছু বিষয়ে মতামত দেওয়ার অধিকার পাবেন তিনি। তাছাড়া, পুরুষ-সর্বস্ব এই পরিষদে তিনি পাবেন ভোট দেওয়ার অধিকারও।
বর্তমান বিশপ পরিষদে ২০১৯ সাল থেকে কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করে এসেছেন ফ্রান্সের ‘জাভিয়ে মিশনারি সিস্টার্স’ এর সদস্য ৫২ বছর বয়সী নাতালি বেকা।
তার পাশাপাশি বিশপ পরিষদে আন্ডারসেক্রেটারি পদে নিয়োগ পেয়েছেন স্পেনের নারী যাজক লুইস ম্যারিন দে সান মার্তিন।
এই নিয়োগের মধ্য দিয়ে পোপ নারীর ক্ষমতায়নের পথে আরেক ধাপ অগ্রগামী পদক্ষেপ নিলেন। বিশপ পরিষদের মহাসচিব কার্ডিনাল মারিও গ্রেচ বলেছেন, “একটি দ্বার খুলে গেল।”
এর মধ্য দিয়ে চার্চে বুদ্ধিবৃত্তিক এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো বিষয়গুলোতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ব্যাপারে পোপের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন গ্রেচ।
যদিও বিশপ পরিষদে এই নিয়োগ কোনও নারীর পাদ্রি হওয়ার আগের ধাপ নয়; তবে বিরোধীরা একে ওই পথে এক ধাপ অগ্রগামী পদক্ষেপ হিসাবেও দেখতে পারে বলে জানিয়েছেন বিবিসি’র এক সাংবাদিক।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশপ পরিষদ ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের মধ্যে বিয়ে এবং বিয়ে বিচ্ছেদসহ অনেক ধরনের বিষয় নিয়ে বিতর্ক করে আসছে। পোপ ফ্রান্সিসও চার্চের কার্যক্রমে নারী অংশগ্রহণ বাড়াতে যুগান্তাকারী কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন।
গত মাসে তিনি চার্চ ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পরিচালনায় নারীদের অনুমতি দিয়ে আইন পরিবর্তন করেছেন। গত বছর ভ্যাটিকানের আর্থনৈতিক বিষয় তদারককারী পরিষদে ছয়জন নারী নিয়োগ করেন পোপ। ভ্যাটিকানের আপিল কোর্টেও প্রথম নারী নিয়োগ করেছেন তিনি।
আর বিশপ পরিষদে (সিনড অব বিশপস) নারীরা এতদিন তদারককারী এবং কনসালটেন্ট হিসাবেই কাজ করে এসেছে। পরিষদ থেকে পোপের কাছে কোনও চূড়ান্ত নথি পাঠানোর ক্ষেত্রে তাতে ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল কেবলমাত্র ‘সিনড ফাদারদের’; অর্থাৎ, বিশপ, বিশেষভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কিংবা নির্বাচিত পুরুষ প্রতিনিধিদের।
২০১৮ সালে বিশপ পরিষদের সম্মেলনে ১০ হাজার মানুষ নারীদের ভোটাধিকার চেয়ে একটি পিটিশনে সই করেছিল। আর এখন নারীদের জন্য সেই দ্বারই খুলল।
“ভবিষ্যতে আরও কি পদক্ষেপ নেওয়া হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা” ভ্যাটিকান নিউজ ওয়েবসাইটে বলেছেন, সিনডের মহাসচিব গ্রেচ।