ক্যাটাগরি

লাউ চাষে সুদিনের প্রত্যাশা পারুলের

ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের কাচনাপাড়া
গ্রামের পারুল দেড় বিঘা জমি বর্গা নিয়ে লাউ চাষ করেছেন্। তাতে ফলনও হয়েছে ভালো।

সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, পারুল
বেগমের ক্ষেত্রের মাচার ওপর লাউয়ের লতা; তাতে ঝুলছে ছোটো বড়ো মাঝারি হাজারো লাউ।

পারুল বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে
জানান, জীবনে অনেক দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেছেন। ৩০ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তার। স্বামী ফার্নিচারের
কাজ করলেও সংসারের অভাব-অনটনের দিকে নজর ছিল না। মাঝে মাঝে নিরুদ্দেশ হতেন। তাই পারুলকেই
খাল-বিলে কৃষিকাজ করে তাকে সংসার চালাতে হতো।

মেয়েকে এইচএসসি পর্যন্ত পড়িয়ে বিয়ে দিয়েছেন।
একমাএ ছেলেকে নিয়ে এখন ছোট সংসার তাদের।

পারুল বলেন, নিজের জমি না থাকায় রাস্তার
পাশের পতিত ও অন্যের জমি বর্গা নিয়ে লাউয়ের উচ্চ ফলনশীল বীজ কিনে চারা করে রোপন করেছেন।

জমি প্রস্তুত, সার, সেচ, কীটনাশক, মাচা
তৈরি, পরিচর্যাসহ সব মিলিয়ে তার ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে; জমি বর্গা নিতে ১৫ হাজার
টাকা লেগেছে বলে জানান।  

এই ফলন থেকে এবার লাখ টাকার বেশি আয় হবে
বলে মনে করছেন পারুল।  

পারুল আরও বলেন, অন্য কাজের চেয়ে কৃষিকাজই
তার ভালো লাগে। এলাকার অনেকেই এখন তার ক্ষেত দেখে লাউ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আতাবুর রহমান বলেন,
পারুল বেগম একজন সংগ্রামী নারী। এই এলাকায় নারীদের জন্য আদর্শ। কৃষিকাজে তার কষ্ট দূর
হয়েছে। তার লাউ ক্ষেত দেখতে অনেক লোক আসে। যে দেখে তারই মন ভরে যায়।

“তার মতো এই এলাকার অনেকেই এখন সবজি চাষ
করে আয় করছেন। প্রতিটি পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। পাল্টে গেছে পুরো গ্রামের দৃশ্যপট। চারদিকে
এখন সবজির ক্ষেত, সবুজের সমারোহ।”

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোছাদ্দেক
হোসেন বলেন, খুলনার ডুমুরিয়াকে ‘শস্যভাণ্ডার’ বলা হয়। এই অঞ্চলের শাক-সবজি, ফলমূল ও
খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে।

তিনি বলেন, একজন উদ্যোমী চাষি পারুল বেগম।
তিনি এলাকার নারীদের অহংকার। জীবনযুদ্ধেও তিনি সফল। লাউ ছাড়াও বেগুন, টমেটোসহ অন্য
সবজির আবাদও করছেন তিনি।

কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, “কৃষিবিভাগ
থেকে তাকে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারসহ যাবতীয় পরামর্শ দিয়ে
আসছি আমরা। তাকে দেখে অনেকেই এখন কৃষিতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।”