ক্যাটাগরি

ওয়ারীতে যুবকের খণ্ডিত লাশ: আদালতে শাহনাজের জবানবন্দি

এ মামলার তদন্ত কমকর্তা এস আই সাইফুল ইসলাম শুক্রবার শাহনাজকে ঢাকার হাকিম
আদালতে হাজির করেন।

পরে মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক
জবানবন্দি শাহনাজ। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার পর বিচারক তাকে
কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আজাদ রহমান জানান।

বৃহস্পতিবার বিকালে কে এম দাস লেইনের একটি বাসার চতুর্থ তলায় সজীব হাসান
নামে ৩৩ বছর বয়সী ওই যুবকের লাশ পায় পুলিশ। লাশের তিন টুকরা ঘরের মেঝেতে এবং দুই টুকরা
টয়লেটে ছিল।

সেখান থেকেই ৪৮ বছর বয়সী শাহনাজকে
গ্রেপ্তার করা হয়, যাকে খুঁজতে পুলিশ ওই বাসায় গিয়েছিল। 

গত মঙ্গলবার বাসা থেকে বেরিয়ে শাহনাজ আর
না ফেরায় তার স্বামী ওয়ারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।

সজীবের লাশ উদ্ধারের পর তার আত্মীয় নজরুল
ইসলাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেখানে শাহনাজকেই
একমাত্র আসামি করা হয়।

পুলিশের ভাষ্য, সজীবের সঙ্গে শাহনাজের
প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে কারণে শাহনাজ তার স্বামীর বাসা থেকে তিন দিন আগে
টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে এসে সজীবের বাসায় ওঠেন।

জিডি হওয়ার পর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে
শাহনাজের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সজীবের বাসায় যায় পুলিশ। সেখানে শাহনাজকে পাওয়ার
পাশাপাশি সজীবের লাশও মেলে।

পুলিশের উপ-কমিশনার ইফতেখার আলম বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, “সজীবের সঙ্গে থাকতে
গিয়ে শাহনাজ বুঝতে পারেন, সজীবের অন্য মেয়েদের সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে এবং সজীবের
মুখ্য উদ্দেশ্য শাহনাজের টাকা ও স্বর্ণালংকার।”

শাহনাজকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া
তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ঝগড়ার সময় ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

“তিনি বলেছেন, সজীবের সঙ্গে তার প্রথমে
ঝগড়া হয়, তখন সজীব তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পরে ধস্তাধস্তির মধ্যে ছুরি শাহনাজের
হাতে চলে আসে। তখন তিনি সজীবকে ছুরি মারলে সে মারা যায়।”

এরপর শাহনাজ রান্না ঘরের বটি দিয়ে
সজীবের মৃতদেহ পাঁচ টুকরা করার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। শাহনাজের
হাতেও কেটে যাওয়ার জখম থাকার কথা জানান তিনি।

এক কক্ষের ওই বাসায় সজীব একাই থাকতেন।
একটি পরিবহনের টিকেট বিক্রির পাশাপাশি সজীব হস্তশিল্পের কাজ করতেন। তার বাড়ি
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডে।

পুলিশ বলছে, পাঁচ বছর ধরে সজীবের সঙ্গে শাহনাজের
প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। তাকে স্ত্রী হিসেবে দেখিয়েই স্বামীবাগের বাসাটি সজীব ভাড়া
নিয়েছিলেন।