বিশ্বজুড়ে নারীদের কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে নারীদের মুখ খোলার যে ঝড় (#মি টু আন্দোলন) উঠেছিল ২০১৮ সালে তার ঢেউ ভারতেও লাগে।
ভারতের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রিয়া রামানি প্রথম ওই সময়ে দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা আকবরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ তোলেন। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে আকবর নিজেও প্রায় ২০ বছর সাংবাদিকতা করেছেন।
সাংবাদিক থাকার সময়ই আকবরের যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন প্রিয়া। ওই সময় আকবরের বিরুদ্ধে নামে/বেনামে অন্তত ২০ জন নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন।
যার সবগুলোই অস্বীকার করেন আকবর। অভিযোগের জেরে তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ নিয়ে আইনী লড়াই শুরুর ঘোষণা দেন।
২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রিয়া রামানির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন আকবর।
বিবিসি জানায়, বুধবার রাজধানী দিল্লির একটি ট্রায়াল আদালত ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বিচারপতি বলেন, ‘‘যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার দায়ে একজন নারীকে কোনভাবেই শাস্তি দেওয়া যায় না।”
ভারতের #মি টু আন্দোলনের সময় যে নামগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তার মধ্যে এম জে আকবর ছিলেন সবথেকে প্রভাবশালী।
প্রিয়া রামানির বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলায় আকবরের অভিযোগ ছিল, প্রিয়ার কারণে তার ‘দীর্ঘদিনের সুনাম ও খ্যাতি বিনষ্ট হয়েছে’।
রায়ের পর প্রিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘সত্য প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের ভালোর জন্য’ তিনি এ মামলা লড়েছেন।
বলেন, ‘‘আকবর নিজের যে খ্যাতির কথা বলছেন তা আসলে মিথ্যা।’’
বুধবারের রায়ে অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিসট্রেট রবীন্দ্র পান্ডে বলেন, ‘‘সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত একজন পুরুষও যৌন নীপিড়ক হতে পারেন। যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার ফলে মানুষ তার সম্মান এবং আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। মানুষের সম্মানের অধিকারের বিনিময়ে কারো খ্যাতি ধরে রাখার অধিকারের সুরক্ষা দেওয়ার কোনো মানে হয় না।”