‘সংগঠন পরিপন্থি কাজে’ জড়িত থাকার অভিযোগে কাদের মির্জাকে দলীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পাশপাশি ‘দল থেকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে’ বলেও শনিবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে জেলা সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর স্বাক্ষর রয়েছে।
তবে এর কিছু সময় পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, “প্রথমে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে দলীয় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমি সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছি।
“যেহেতু বিষয়টি নেত্রীর কাছে পেন্ডিং আছে এবং আমি মনে করি আমাদের অব্যাহতিরও এখতিয়ার নেই।”
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী
আবদুল কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। তিনি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।
সম্প্রতি বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনের সময় বিভিন্ন বিস্ফোরক বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন কাদের মির্জা। নির্বাচন সামনে রেখে তিনি কেন্দ্রের ও জেলার কয়েকজন নেতার তীব্র সমালোচনাও করেছিলেন।
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পদকের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার কারণ হিসেবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ‘সন্ত্রাসী দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের গুরুতর আহত করা, বিভিন্ন সমাবেশ ও ফেইসবুকে দলের কেন্দ্রীয়সহ জেলার নেতাদের সম্পর্কে মিথ্যা, অশালীন বক্তব্য এবং হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ করা হয়।
সেখানে বলা হয়, “সংগঠন বিরোধী উল্লেখিত কারণ ও দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দুল কাদের মির্জাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করার জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।”
তবে যৌথভাবে পাঠানো বিজ্ঞপ্তির সিদ্ধান্ত থেকে দলটির জেলা কমিটির সভাপতি সরে যাওয়া প্রসঙ্গে রাত ৯টা ২৫ মিনিটে ফেইসবুকে বক্তব্য দেন বিজ্ঞপ্তির অপর স্বাক্ষরকারী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “একজন লোক অপরাধী। মির্জা কাদের শুধু নোয়াখালী নয়, সারাদেশের আওয়ামী লীগকে ছোট করেছে- তাকে তো ছাড়া যায় না। তার বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিয়েছি।
“আমার সভাপতি কী বলেছেন আমি জানি না। তিনি নাকি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
“তিনি আমাকে দিয়ে নির্দেশনা দিলেন, আবার প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, এখন তো তিনিও নীতিহীন হয়ে গেলেন।”
এরপর তিনি বলেন, “কাদের মির্জার অব্যাহতি অব্যাহত রেখেছি। এ ধরণের লোকদের দলের অবস্থানে রাখা উচিত না। সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, তার অব্যাহতি বহাল রইল।”
এ বিষয়ে আবদুল কাদের মির্জার ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।