সোমবার জেনিভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে দেওয়া বার্ষিক বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান বিশ্ব সংস্থাটির মহাসচিব, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গুতেরেস বলেন, “আমরা গণতন্ত্রকে পঙ্গু হতে দেখছি, নিষ্ঠুর শক্তির ব্যবহার দেখছি, যথেচ্ছ গ্রেপ্তার, দমন এসবের সবই দেখছি। নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে দেখছি। সুশীল সমাজেরও ওপর হামলা। কোনো জবাবদিহিতা ছাড়াই সংখ্যালঘুদের অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন, এরমধ্যে যাকে সঠিকভাবে বলা যায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জাতিগত নির্মূলকরণ। তালিকা বাড়ছে।
“আজ, আমি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে অবিলম্বে দমন বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। বন্দিদের মুক্তি দিন। সহিংসতা শেষ করুন। মানবাধিকারের প্রতি এবং সাম্প্রতিক নির্বাচনে জনগণের যে ইচ্ছা প্রকাশ পেয়েছে তার প্রতি শ্রদ্ধা দেখান।
“আমাদের আধুনিক বিশ্বে সামরিক অভ্যুত্থানের কোনো স্থান নেই।”
সোমবারও মিয়ানমারের রাস্তায় রাস্তায় হাজার হাজার প্রতিবাদকারী জড়ো হয়ে সামরিক শাসনের অবসান ও নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিসহ কারাবন্দি অন্যান্যদের মু্ক্তি দাবি করেন।
এ দিনের বিক্ষোভকে ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে অন্যতম বৃহত্তম প্রতিবাদ বলে অভিহিত করেছে বিবিসি।
এ দিন কর্মচারীরা সাধারণ ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় দেশটির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল। প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন, সামরিক বাহিনীর এমন বিবৃতি সত্ত্বেও হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে সামিল হয়।
রাজধানী নেপিডোতে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এখানে একটি জলকামানবাহী ট্রাককে অবস্থান নিতেও দেখা গেছে।
অভ্যুত্থানের পর থেকে গত তিন সপ্তাহ ধরে মিয়ানমার নিয়মিত সামরিক বাহিনী বিরোধী বিক্ষোভ দেখছে। এ পরিস্থিতিতে ক্ষমতাচ্যুত সরকারকে পুনর্বহাল করতে মিয়ানমারের জেনারেলদের ওপর আন্তর্জাতিক চাপও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা মিয়ানমারের অভ্যুত্থানের নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, তারাও মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিয়েছে।
এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ ও অন্যান্য বিদেশি সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘সুস্পষ্ট হস্তক্ষেপের’ অভিযোগ এনেছেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
মিয়ানমার: ধর্মঘটের ডাক অভ্যুত্থানবিরোধীদের
‘আমরা থামবো না’, সামরিক জান্তাকে বার্তা মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের