ক্যাটাগরি

আল মুসলিম গ্রুপের প্রতিবাদ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের বক্তব্য

এ ব্যবসায়ী গ্রুপ দাবি করেছে, “সংবাদে এ কে এম নিট ওয়্যার লিমিটেড কর্তৃক ২০১৫-১৬ ইং অর্থ বছরে ১৭৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বলে যে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন কাল্পনিক, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।”

‘১৭৫ কোটি টাকা পাচার: আল মুসলিম গ্রুপের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত হয়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুর বিষয়টি ওই দিন দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। তার বরাতে সে খবরটিই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রকাশ করেছে, যা অন্য আরও অনেক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিজস্ব কোনো অনুসন্ধান বা বক্তব্য সেখানে নেই।

আল মুসলিম গ্রুপ যে প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছে, সেখানে অর্থ পাচারের অভিযোগ নিয়ে দুদকের অনুসন্ধানের বিষয়টি তারা উল্লেখ করেনি। বিগত কয়েক বছরে তাদের ব্যবসায়িক সাফল্যের বিবরণ সেখানে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, আল মুসলিম গ্রুপের কোম্পানি এ কে এম নিট ওয়্যার লিমিটেড রপ্তানির জন্য ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকারের স্বর্ণ ট্রফি এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রৌপ্য ট্রাফি পেয়েছে।

“যদি আমাদের প্রতিষ্ঠানটি অর্থপাচারের সাথে জড়িত থাকত, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও লিয়েন ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো প্রকার আমদানি কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হত না।”

আল মুসলিম গ্রুপ বলছে, “গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনট্রিগ্রিটি বিশ্বের ১৩৫ দেশের সম্পর্কে অর্থ পাচারের রিপোর্ট করেছে, উক্ত তালিকায় বাংলাদেশ ৩৩তম স্থানে রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছু বলেনি। এতে আরো প্রমাণিত হয় যে কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে প্রভাবিত হয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে প্রতিবেদক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার নিমিত্তে এই সংবাদ প্রচার করেছে উক্ত রিপোর্টটি বিভ্রান্তিকর এবং মানহানিকর।”

“অতএব, এ কে এম নিট ওয়্যার লিমিটেডের পক্ষ থেকে প্রতিবাদপত্রে ‘প্রকাশিত সংবাদের উপর গভীর ক্ষোভ প্রকাশ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি।”


১৭৫ কোটি টাকা পাচার: আল মুসলিম গ্রুপের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু
 

প্রতিবেদকের বক্তব্য

গত ২২ ফেব্রুয়ারি সেগুনবাগিচায় দুদক সচিব বলেন, “কতিপয় গার্মেন্টস মালিকদের বিরুদ্ধে কিছু পাবলিক সার্ভেন্টের সহযোগিতায় অবৈধ সম্পদ অর্জনপূর্বক আমদানি ও রপ্তানির আড়ালে বাংলাদেশ হতে প্রতি বছর গড়ে ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচার এবং আল মুসলিম গ্রুপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রপ্তানির আড়ালে ১৭৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের একটি অভিযোগ প্রাপ্তির পর দুদক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

এসব অভিযোগ অনুসন্ধানে আলাদাভাবে তিন সদস্য ও চার সদস্যর দুটি অনুসন্ধান দল তদন্ত করছে জানিয়ে আনোয়ার হোসেন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অনুসন্ধান টিম কর্তৃক প্রতিবেদন দাখিল করা হলে তা পর্যালোচনা করে কমিশন আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে থেকে ‘ওভারইনভয়েসিং’ সংক্রান্ত কিছু তথ্যের ভিত্তিতে দুদক ওই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

দুদক সচিবের ওই বক্তব্যের বাইরে কোনো কিছুই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়নি। তার বক্তব্যের রেকর্ডও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে সংরক্ষিত আছে।

অনুসন্ধান সম্পর্কে দুদক সচিবের ওই দিনের বক্তব্য নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাশাপাশি আরও বেশকিছু সংবাদ মাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে।

এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে,আল মুসলিম গ্রুপের কোন কোম্পানির বিরুদ্ধে কোন অর্থ বছরে টাকা পাচারের অভিযোগ দুদক পেয়েছে, সে বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কোনো উল্লেখ ছিল না।

কিন্তু প্রতিবাদপত্রে তাদের ‘এ কে এম নিট ওয়্যার লিমিটেডের’ কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে টাকা পাচারের অভিযোগের কথা তুলে ধরে সংবাদের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

যে প্রতিবেদনের বিষয়ে আল মুসলিম গ্রুপ প্রতিবাদ জানিয়েছে, তাতে প্রতিবেদকের নিজের কোনো বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়নি। ফলে প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য এবং প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে তাদের তোলা অভিযোগই আসলে ভিত্তিহীন।