কেরানীগঞ্জে
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে
ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ
জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে এ মামলার কার্যক্রম
চলছে।
বিএনপি
চেয়ারপারসন মঙ্গলবার সশরীরে হাজির না হয়ে আইনজীবীর
মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দেন। তার অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানি করেন তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
তিনি
বলেন, “নাইকো চুক্তির সিদ্ধান্ত ও চুক্তিতে স্বাক্ষর
করেছিলেন খালেদা জিয়ার আগের প্রধানমন্ত্রী। খালেদা জিয়া তা বাস্তবায়ন করেছিলেন
মাত্র। সুতরাং এ মামলায় তার
বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য ও যথাযথ নয়।”
এদিন
আংশিক শুনানি শেষে বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান অবশিষ্ট শুনানির জন্য ১৮ মার্চ পরবর্তী
দিন ধার্য করেন।
মহামারীর
মধ্যে বাইরে বের হওয়া ‘নিরাপদ নয়’- এই যুক্তি দিয়ে
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দফায় দফায় সময়ের আবেদন করায় নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি বার বার পিছিয়ে যায়।
এ
বিষয়ে তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা বিচারককে বলেছি, এর আগে খালেদা
জিয়া কারাগারে অন্তরীণ অবস্থায় অসুস্থ থাকায় তাকে এজলাসে আনা হয়নি বার বার। সেজন্যও শুনানি পিছিয়েছে। এটা আমাদের ব্যথর্তা নয়।”
কানাডীয়
প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের
সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের
করেন।
২০১৮
সালের ৫ মে খালেদা
জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে
আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সেখানে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭
কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।
মামলার
অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম
মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ
মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ
হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের
সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
আগে
এই মামলার বিচারকাজ পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে চলত। পরে নিম্ন আদালতে বিচারাধীন খালেদা জিয়ার মামলাগুলোর বিচার কেরানীগঞ্জের কারাভবনের অস্থায়ী এজলাসে স্থানান্তরের আদেশ দেয় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক
মন্ত্রণালয়।
দুর্নীতির
দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইতোমধ্যে ১০ ও সাত
বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
দেশে
কেরানাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে
সরকার গত ২৫ মার্চ
‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য
সাজা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। পরে আরও ছয় মাসের জন্য
তা বাড়ানো হয়।
তখন
থেকে গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৭৫ বছর বয়সী
খালেদা।
আরও পড়ুন
নাইকো দুর্নীতি: অভিযোগ গঠনের শুনানি ৮ ফেব্রুয়ারি
নাইকো: খালেদার অনুপস্থিতিতে পিছিয়েছে শুনানি
নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানি আবারও পেছালো
খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের আবেদনে সাড়া মেলেনি
মওদুদের নাইকো দুর্নীতি মামলা চলবে
নাইকো দুর্নীতি: খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ফের পেছালো