শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে দুই বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আবার টি-টোয়েন্টি খেলতে দেখা যাবে গেইলকে। ২০ ওভারের ক্রিকেটের মহাতারকা এই সংস্করণে ক্যারিবিয়ানদের হয়ে সবশেষ খেলেছেন ২০১৯ সালের মার্চে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাকে সবশেষ দেখা গেছে ২০১৯ সালের অগাস্টে।
লম্বা বিরতিতে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলা লোকের অভাব ছিল না। কিন্তু বয়স ৪১ পেরিয়ে আবার তিনি ফিরেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে। লঙ্কানদের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু সিরিজে তাকে দেখা যাবে।
সিরিজ শুরুর আগে সোমবার অ্যান্টিগায় সংবাদ সম্মেলনে গেইল জানিয়ে দিলেন তার নতুন শুরুর পেছনে তাড়নার উৎস।
“আমি জানি, আমি ফিরেছি বলে মনোযোগ এদিকে থাকবে। তবে সত্যি বলতে, এই প্রসঙ্গে যেতেই চাই না। দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছি আমরা। পোলার্ড খুব শক্ত অধিনায়ক, দলে দারুণ কজন ক্রিকেটার আছে। এই সিরিজ জিতে শুরু করতে চাই, তবে মূল লক্ষ্য অবশ্যই তিনটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যই আমি ঠিক করেছি।”
“বেশ কটি সিরিজ আছে আমাদের সামনে, বিশ্বকাপের আগে অনেক খেলা আছে। এই সিরিজগুলো যত বেশি সম্ভব কাজে লাগাতে হবে। বিশ্বকাপ যদিও এখনও বেশ দূরে, তবে চোখের পলকেই সময়টুকু কেটে যাবে। প্রাণশক্তি ধরে রাখতে হবে আমাদের, ফিট থাকতে হবে এবং দেখিয়ে দিতে হবে যে এই ছেলেদের নিয়েই জয়ের সামর্থ্য আমাদের আছে।”
অবসরের ভাবনা যে তার মাথায় খেলেনি, তা নয়। তবে লোকের ভালোবাসাই তাকে খেলা চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করছে বলে জানালেন গেইল।
“খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা সত্যিই ভেবেছিলাম। তখন লোকে বলল, ‘না, এটা করো না, করো না এটা। থেকে যাও, যতদিন সম্ভব খেলে যাও।’ এজন্য ঠিক করলাম, খেলে যাব। এই পথে (জাতীয় দলে খেলা) এগোনোর কথা আসলে তখন ভাবিনি। ভেবেছি, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলব, মানুষকে বিনোদন দেব, খেলাটায় ক্রিস গেইলের যতটা অবশিষ্ট আছে, বিশ্বজুড়ে সেটা দেখাব।”
“এরপর ডাক পেলাম, তারা জানতে চাইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যানেজমেন্ট) আমি আগ্রহী কিনা। আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে চাই। আমার হৃদয় সেখানেই। এই সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট সংক্রান্ত কোনো কিছুই ফেলে দিতে পারি না। এজন্যই পাকিস্তান থেকে (পিএসএল) ফিরে এসেছি এই দলের অংশ হতে, যেন বিশ্বকাপের আগে দলে একতা গড়ে ওঠে এবং বিশ্বকাপ আমরা যেন জিততে পারি।”
নতুন এই অধ্যায়ে নতুন একটি অভিজ্ঞতাও হতে পারে গেইলের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের পুরোটাই তিনি ব্যাট করেছেন ওপেনিংয়ে। এবার তাকে একটু নিচে দেখা যেতে পারে। গত আইপিএল, এবারের পিএসএলে বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যান ঝড় তুলেছেন তিন নম্বরে ব্যাট করে।
ক্যারিবিয়ানদের হয়েও এমন কিছু করতে তার আপত্তি নেই। সব পজিশনেই সেরা হতে পারার বিশ্বাস তার আছে।
“এটা কোনো সমস্যা নয়। স্পিন আমি ভালো খেলি। ওপেনার যেহেতু, ফাস্ট বোলিং যে কারও মতোই ভালো খেলি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে যে ভূমিকাই দেওয়া হোক, পালন করতে প্রস্তুত আছি।”
“এটা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি আমাদের। ওপেনিং করানো না হলে ৩ নম্বর, ৫ নম্বর, যে কোনো জায়গায় খেলতে প্রস্তুত আমি। তখনও আমি বিশ্বের সেরা ৫ নম্বর হব, বিশ্বের সেরা ৩ নম্বর হব।”