ক্যাটাগরি

মুন্সীগঞ্জে পুদিনা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা

উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে পুদিনাপাতার চাষ হয় প্রতিবছরই। তবে এ বছর নতুন করে এ অঞ্চলের অনেক কৃষক এ পাতা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

সিরজাদিখান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র জানান, শুধু বালুচর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পুদিনাপাতার চাষ হলেও সেটা ছিল সীমিত আকারে। এবারই প্রথম এ অঞ্চলে ব্যাপক হারে পুদিনার চাষ হচ্ছে।

তিনি বলেন, “গত বছর প্রায় সাত হেক্টর জমিতে পুদিনাপাতার চাষ হয়েছিল। এ বছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”

“এক একর জমিতে পুদিনা চাষে খরচ হয় আনুমানিক ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা। সব ঠিক থাকলে উৎপাদিত পুদিনা প্রায় ছয় লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন কৃষকরা।”

কৃষকরা জানান, পুদিনা এক ধরনের সুগন্ধী গাছ। তরকারিসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীতে সুগন্ধ ছড়াতে পুদিনাপাতা ব্যবহার করা হয়। রমজান মাসে হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে ঘরে ঘরে এর চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ইফতারিতে পুদিনাপাতা চান অনেকে। পাশাপশি এ পাতার রয়েছে নানা ওষুধি গুণ। দেশ ও বিদেশে পুদিনাপাতার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দামও মেলে আশানুরূপ। তাই অনেক কৃষক এখন পুদিনাপাতার আবাদে ঝুঁকেছেন।

স্বল্প সময়ে বেশি লাভ পাওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পুদিনার আবাদ।

উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, রমজান সামনে রেখে অনেক কৃষক প্রথমবারের মত পুদিনা চাষ করছেন।

ওই এলাকার কৃষক নূর ইসলাম বলেন, “এ বছরই প্রথম পাঁচ বিঘা জমিতে ৯০ হাজার টাকা খচর করে পুদিনা পাতার চাষ করেছি। রোজার বাজার ভালো গেলে মাত্র এক বিঘা জমির পুদিনাপাতা বিক্রি করলেই পুরো খরচ উঠে যাবে।”

নীলফামারী জেলা থেকে আসা শ্রমিক সাহিবুল ইসলাম বলেন, “সিরাজদিখান উপজেলায় চান্দের চরে মোট ৭০ জন লোক কাজ করি। আমরা প্রায় সব কৃষিকাজই করে থাকি। এতদিন আলু রোপণ ও উঠানোর কাজ করেছি, এখন আবার সেই জমিনেই পুদিনা চাষ করছি। ”

মো. আলম হোসেন নামে আরেক কৃষিশ্রমিক বলেন, বর্তমান পাতার মূল্য অনুযায়ী এক বিঘা জমিতে চার হাজার টাকার পাতা লাগে। পুদিনা পাতা লাগানোর প্রথম দিন পানি দিতে হয়। তার পরের দিনও দিতে হয়। তারপর আর লাগে না। এরপর শুরু হয় জমি নিড়ানি আর পরিচর্যার কাজ। পুদিনাক্ষেতে পানি না দিলেও সমস্যা আবার বৃষ্টির পানি দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকলেও সমস্যা।

এখন রোপণ করা পুদিনাপাতা রোজার সময় পুরোপুরি বিক্রির উপযুক্ত হবে বলে জানান কৃষকরা।