দিনটি স্মরণে মঙ্গলবার বিকেলে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের আয়োজনে এক আলোচনা
সভায় অংশ নেন তখনকার সেই তরুণ তুর্কিরা,
যারা পরে
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
সভায় নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালের ১ মার্চ পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খান হঠাৎ
করেই সংসদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন। ওই ঘোষণার পর বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলন দাবানলের মতো বিস্ফোরিত হয়।
“২ মার্চ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
বটতলায় ছাত্রজনতার সমাবেশে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়। একই দিনে চট্টগ্রামে প্রথম
পাকিস্তানের পতাকায় আগুন দেওয়া হয়।”
পাঁচ দশক আগের সেদিনের স্মৃতি তুলে ধরে নঈম বলেন, একাত্তরের ১ মার্চ চট্টগ্রামের তৎকালীন জিন্নাহ পার্কে (বর্তমান শহীদ মিনার) ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভা থেকে সিদ্ধান্ত হয়, ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত
কর্মসূচির সাথে সমন্বয় রেখে ২ মার্চ চট্টগ্রামে হরতাল হবে। পাশাপাশি লালদীঘি ময়দানে
হবে সমাবেশ।
“সে অনুযায়ী ২ মার্চ চট্টগ্রামে
সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। বিকালে লালদীঘি ময়দানে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চাকসুর তখনকার
ভিপি মো. ইব্রাহিম। ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তৎকালিন ছাত্রনেতা মৌলভী সৈয়দ, এস এম ইউসুফ, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, আইয়ুব বাঙালি,
আব্দুল্লাহ
হারুনসহ চট্টগ্রামের প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রসংসদের ভিপি-জিএসরা।
“এ সময় বিক্ষুব্ধ সমাবেশে পাকিস্তানের
পতাকায় আগুন দেন সে সময়ের মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ
ইউনুচ।”
মোহাম্মদ ইউনুচ পরে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে, অংশ নেন সম্মুখ সমরে। এখন তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব।
সভায় উপস্থিত ইউনুচ বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতায়
চট্টগ্রামের ভূমিকা অপরিসীম। একাত্তর সালের ২ মার্চ লালদীঘি ময়দানের সে প্রতিবাদের
স্ফূলিঙ্গ দাবানলের মত সারা চট্টগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছিল, যা মহান মুক্তিযুদ্ধে অনবদ্য ভূমিকা রাখে।”
এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে বিজয় মেলা পরিষদের কার্যালয়ে এই সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল
হক বীর প্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের
কমান্ডার মাহাবুবুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা পঙ্কজ
দস্তীদার, নগর আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মাহমুদুল
হক, নগর শ্রমিক লীগ নেতা সাইফুর রহমান
স্বপন, যুবলীগ নেতা শরফুদ্দীন চৌধুরী
রাজু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলী রেজা
পিন্টু, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ
সম্পাদক নূরুল আজিম রনি, মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি
একরামুল হক রাসেল আলোচনায় অংশ নেন।
অন্যদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির নূরুল আবচার, শ্রমিক লীগ নেতা নাছির উদ্দীন শামীম ও মেজবাহুল ইসলাম, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আজিজুর রহমান, মোহাম্মদ সুমন,
ছাত্রলীগ
নেতা শাহাজাদা চৌধুরী, তানভীর মেহেদী মাসুদ, আরিফ হোসেন ও মায়মুন উদ্দীন মামুনও সভায় উপস্থিত ছিলেন।