অভিযোগকারীরা নাম প্রকাশ না করলেও খাদ্যগুদামে সরবরাহ বন্ধ হওয়া এবং পরিবহন সমিতির অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে প্রশাসন।
ফলে সরকারি বরাদ্দ থাকার পরও খাদ্য সরবরাহ দিতে পারছে না খাদ্যগুদামসমূহ। তাই খাগড়াছড়ির পাঁচটি এবং রাঙামাটির দুইটি খাদ্যগুদাম খাদ্যশস্য সরবরাহ পাচ্ছে না।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এই অবস্থা চলছে বলে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
তারা জানান, চট্টগ্রাম থেকে খাদ্যশস্য পরিবহন বন্ধ হওয়ায় সংকটে থাকা গুদামগুলো হলো খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সদর, দীঘিনালা উপজেলার আওতাধীন বাবুছড়া ও মেরুং খাদ্যগুদাম, পানছড়ি ও মহালছড়ি খাদ্যগুদাম এবং রাঙামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ি খাদ্যগুদাম।
রাঙ্গামাটির দুটি উপজেলার খাদ্যশষ্যের ট্রকগুলো খাগড়াছড়ি সদর ও দীঘিনালা উপজেলা হয়ে যাতায়াত করে থাকে।
দীঘিনালা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসির বলেন, খাদ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় গুদামে চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য নেই। এই পরিস্থিতিতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা মূল্যের চালও দেওয়া সম্ভব হবে না বলে শঙ্কা রয়েছে।
বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন বলে জানান।
গুদামে খাদ্য না থাকায় ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীদের ত্রৈমাসিক রেশনের ডিও (ডেলিভারি ওর্ডার) কপি পাওয়ার পরও তা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা বলেন, বাঙালি গুচ্ছগ্রাম এবং ভারত প্রত্যাগত শরনার্থীদের অনুকূলে ডেলিভারি অর্ডার দিয়ে রেশন দেওয়া হয়ে থাকে। সেই অনুসারে খাদ্যের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। অথচ গত ফেব্রুয়ারি মাসের পাঠানো ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) অনুযায়ী খাদ্যশস্য দীঘিনালায় পৌঁছেনি।
এই নিয়ে খাদ্য পরিবহন সমিতির নেতারা ভয়ে মুখ খুলতে রাজি নন।
নাম প্রকাশে না করে তারা বলেন, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ি আঞ্চলিক দলগুলোর চাঁদাবাজি আর হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে তারা পরিবহন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কিংবা চাহিদামত চাঁদা দিতে না চাইলে চালক ও হেলপারদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। গাড়ির কাগজপত্র জব্দ করে রাখা হয়।
এই বিষয়ে দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ থেকে বিষয়টি তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
ইউএনও মোহাম্মদ উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ থেকে বিষয়টি তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়-খাদ্য পরিবহন নিয়ে চলমান সমস্যা থাকলে আগামীতে সরকারি জরুরি খাদ্য সরবরাহ চরমভাবে ব্যাহত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, খাদ্য পরিবহন ঠিকাদারদের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে। চাঁদাবাজি অব্যাহত থাকার কারণে খাদ্য পরিবহন (ট্রাক) সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে খাদ্য পরিবহন ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন।
এসব কারণে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।