বৃহস্পতিবার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এনবিআর
চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় তিনি ই-কমার্স
খাতের পক্ষ থেকে যেসব কোম্পানি বিদেশি ও প্রবাসী ক্রেতার কাছে দেশি পণ্য বিক্রি করেন,
তাদের জন্য নগদ প্রণোদনা প্রস্তাবও তুলেন।
আলোচনায়
অনলাইনে পণ্য বিক্রেতাদের বার্ষিক এক কোটি টাকার কম বিক্রিতে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার
প্রস্তাব তুলে ধরে শমী কায়সার বলেন, “যেহেতু সরবরাহকারীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম এক কোটি
টাকা বার্ষিক বিক্রি না হলে ভ্যাট প্রযোজ্য হয় না, সেহেতু ক্ষুদ্র ও মাঝারি অনলাইন
উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা যুক্তিযুক্ত।”
এসময়
তিনি যেসব ই-কমার্স কোম্পানি তৃণমুল পর্যায়ে উৎপাগিত পণ্য বিদেশে বিক্রি করেন তাদের
ক্যাশ ইনসেনটিভ দেওয়ার প্রস্তাবও করেন।
তিনি
দাবি করেন, কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ই-কমার্স কোম্পানিগুলো লাভ করেছে বলে মনে করলেও
আসলে প্রায় ৯৫ শতাংশ অনলাইন উদ্যোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
পরে
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, “ই-কমার্সে দোকান ভাড়া লাগে না,
কর্মচারীর বেতন লাগেনা। এতে তাদের কস্ট কমার কথা। খরচ কমার কারণে সহজে ও কমদামে পণ্য
পাওয়া যাবে।”
ই-কমার্সের
প্রভাবে এক সময় স্বাভাবিক দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
সভায়
শমী কায়সার ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে মোট ১৬টি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এর
মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ই-কমার্সকে আইটিইসের অন্তর্ভুক্ত করা, আয়কর আইন ১৯৮৪ এর ধারা
অনুযায়ী ই- কমার্সকে সংজ্ঞায়িত করা, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা, পণ্য ডেলিভারি চার্জে ভ্যাট
প্রত্যাহার, ই ও এফ কমার্স অফিসের ভাড়ার ভ্যাট প্রত্যাহার করা, বুদ্ধিভিত্তিক পণ্যের
ক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স অব্যাহতি, বছরে ৫০ লাখ টাকার কম বিক্রি হলে ভ্যাট অব্যাহতি,
ই-কমার্সে ৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারণের পরিবর্তে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভ্যাট সুবিধা দেওয়া।
শমী
কায়সার বলেন, “কোভিডের সময় ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি নতুন করে ফোকাসে এসেছে। এসময় প্রায়
৭০-৮০ শতাংশ নতুন কোম্পানি হয়েছে। ৩০০ এর অধিক নতুন ডেলিভারি কোম্পানি তৈরি হয়েছে।
ই-ক্যাব
এই খাতের প্রায় দেড় হাজার কোম্পানির প্রতিনিধিত্ব করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কোভিডের
মধ্যে মানুষের হাত অর্থের যোগান কমে যাওয়ায় বিক্রি কমেছে। শুধুমাত্র চাল, ডালসহ নিত্যপণ্যের
বিক্রি অনেকটা ঠিক থাকলেও অন্যান্য পণ্য বিক্রি প্রায় নেই বললেই চলে।”
এমন
পরিস্থিতিতে অনলাইনভিত্তিক কোম্পানিগুলো টিকে থাকতে এসব সুপারিশ বিবেচনা করার আহ্বান
জানান তিনি।
এসময়
রহমাতুল মুনিম বলেন, “ই-কমার্সের পরিধি বাড়ছে কিন্তু আপনারা বলছেন লস করছে।”
এই
ব্যবসাকে শৃংখলায় আনার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই বিজনেসের সঙ্গে
যারা আছে তাদের ট্র্যাক করার যাচ্ছেনা। একেকজন ফেইসবুক দিয়ে, সাইট খুলে এটা করছে। তাদের
ভ্যাটের আওতায় আনা যাচ্ছে না। ৯০ পার্সেন্টই আপনাদের সংগঠনের মেম্বার না।
“ডিসিপ্লিনের
মধ্যে আসতে পারছেন না বলেই অনেক কিছু আপনাদের দিতে পারছি না। আপনারা আইসিটি, বাণিজ্য
মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসেন।”
সব
ই-কমার্সকে একটা প্লাটফর্মে আনার ব্যবস্থা করে ডিজিটাল পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করার প্রয়োজনীয়তা
তুলে ধরেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানে ই-ক্যাব সহ-সভাপতি মো. শাহাব উদ্দিন
শিপন, পর্ষদ সদস্য আসিফ আবরার, ফাহিম মাশরুরসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।