ক্যাটাগরি

ভিসি কলিমউল্লাহ দুষলেন শিক্ষামন্ত্রীকে; ‘রুচিহীন’ বলল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বিশ্ববিদ্যালয়
মঞ্জুরি কমিশনের তদন্তের প্রতিক্রিয়া জানাতে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেন অধ্যাপক
কলিমউল্লাহ।

সম্প্রতি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে
দুটি ১০ তলা ভবন ও একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণে উপাচার্যের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার কথা
জানায় ইউজিসি। এ বিষয়ে উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ
করেছে কমিশনের তদন্ত দল।

এছাড়া অধ্যাপক
কলিমুল্লাহর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার ৪৫টি অভিযোগও তদন্তের উদ্যোগ
নিয়েছে ইউজিসি।

দুপুরে ঢাকা
রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য কলিমউল্লাহ বলেন, “আজকে যে
দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি, আমি দায়িত্ব নিয়েই বলব, এই পুরো পরিস্থিতিটা আমাদের
শিক্ষামন্ত্রীর আশ্রয়, প্রশ্রয় ও আশকারায় হয়েছে।

“ইউজিসির
রিপোর্টের পেছনের দায়দায়িত্ব পুরোপুরি শিক্ষামন্ত্রীর। তার পরামর্শেই কমিটি এই রকম
রিপোর্ট করেছে।”

বিকালে এর
প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলে, “কলিমউল্লাহ সরাসরি
শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বক্তব্য রেখেছেন, যা নিতান্তই
অনভিপ্রেত।”

ইউজিসির তদন্তের
বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও
দুর্নীতির বিষয়ে নানা ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয়
থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বরাবর তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য
অনুরোধ জানানো হয়।

“ইউজিসি তাদের
নিয়ম অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণে তদন্ত সম্পন্ন করে মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন
প্রেরণ করে। ইউজিসি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বিধায় এ প্রক্রিয়ার কোনো
পর্যায়ে মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তারের কোনো
সুযোগ নেই।”

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে সভায় শিক্ষামন্ত্রীর দেরিতে অংশ নেওয়ার
বিষয়েও ব্যাখ্যা দেওয়া হয় বিবৃতিতে।

“অনিচ্ছাকৃত
বিলম্বকে নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কলিমুল্লাহ যে বক্তব্য
রেখেছেন, তা শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনকই নয়; নিতান্তই রুচি বিবর্জিত।”

রোকেয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর বাণী না দেওয়ার প্রসঙ্গে বিবৃতিতে
বলা হয়, “সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
নিয়ে বড় ধরনের ছাত্র আন্দোলন চলছিল। সে পরিস্থিতিতে মন্ত্রী বাণী দেওয়া
সমীচীন মনে করেননি। এরপরে বিগত এক বছরে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মন্ত্রীর কাছে আর
কোনো বাণী চাওয়া হয়নি।”

৬২৫ কার্যদিবসের ৪৬৫ দিন অনুপস্থিত রোকেয়ার উপাচার্য
 

রোকেয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের
তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে শিগগিরই মন্ত্রণালয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত
হবে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।

“উপাচার্যের
বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত আরেকটি অভিযোগের তদন্ত চলমান
রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত অন্যান্য সকল বক্তব্য সম্পর্কে মন্ত্রণালয়
প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও বিবেচনার পর যথাযথ প্রক্রিয়ায় বক্তব্য উপস্থাপন করবে।”