ক্যাটাগরি

বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা: আড়াই বছর পর আদালতে অভিযোগপত্র

সেখানে বলা হয়েছে, ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে সন্দেহ থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ওই হামলা চালায়।”

গোয়েন্দা বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিমের পরিদর্শক আব্দুর রউফ সম্প্রতি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন বলে মহানগর পুলিশের অপরাধ তথ্য ও তদন্ত বিভাগের উপ-কমিশনার জাফর হোসেন জানান।

অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় মোট ৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলেন- ছাত্রলীগের নাইমুল হাসান, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, মো. সাজু ইসলাম, রাজিবুল ইসলাম রাজু, শহিদুল আলম খান কাজল, তান্না ওরফে তানহা ওরফে মুজাহিদ আজমি তান্না, সিয়াম, অলি আহমেদ ওরফে জনি।

অভিযোগপত্রে ১৮ জানুয়ারি তারিখ লেখা থাকলেও জমা পড়ার বিষয়টি শুক্রবার সাংবাদিকরা জানতে পারেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ৪ আগস্ট রাতে সুজনের (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের ইকবাল রোডের বাসায় নৈশভোজের দাওয়াতে গিয়ে বার্নিকাট হামলার শিকার হন।

ওই রাতে নৈশভোজের নামে তিনি গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করছিলেন বলে খবর পায়’ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

আনুমানিক রাত ১১টায় ছাত্রলীগের নাইমুল হাসান ওরফে রাসেলের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটি দল ইটপাটকেল ছোড়ে। তারা বার্নিকাটের গাড়ি ধাওয়া করলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল ছাড়েন।

অভিযোগপত্রে পুলিশ বলেছে, এ সময় সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতেও ইটপাটকেল ছোড়া হয়। জানালার কাচ ভাঙচুর করা ছাড়াও বদিউল, তার স্ত্রী ও ছেলে মাহবুব মজুমদারকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়। মাহবুবকে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করেন আসামিরা। বাড়ির প্রধান গেট ধাক্কাধাক্কি করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা চলে যান।

এ ঘটনায় ওই বছর ১০ আগস্ট রাতে ড. বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

সেখানে অভিযোগে বলা হয়, ওই রাতে ৩০-৪০ জন দুর্বৃত্ত বার্নিকাটের গাড়িতে হামলা করে। তারা ড্রাইভার ও বদিউলের ছেলের ওপর আক্রমণ করে। বার্নিকাটের গাড়ির পেছনে ধাওয়া করে এবং ঢিল ছোড়ে। এ সময় পিস্তল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে আগুন দেওয়ার উসকানি দেয় দুর্বৃত্তরা। বার্নিকাটের গাড়ি দ্রুত বেগে স্থান ত্যাগ করার পর দুর্বৃত্তরা বাদী বদিউলের বাসায় হামলা চালায়। জানালার কাচ ভাঙচুর করে। বাসার গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।

ঘটনার দিন বদিউলের বাসায় বার্নিকাট ছাড়াও ড. কামাল হোসেন, তার স্ত্রী হামিদা হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। তখন রাজধানীসহ সারাদেশে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন চলছিল।

সেই প্রেক্ষাপটের বর্ণনায় অভিযোগপত্রে বলা হয়, “২০১৮ সালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠন সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড চালায়। ওই বছরের ৪ অগাস্ট রাতে ড. কামাল হোসেন ও কয়েকজন মিলে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের ইকবাল রোডের ১২/২ নম্বর বাড়িতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের বিদায়ী নৈশভোজ আয়োজন করেন।

“ড. বদিউল এবং ড. কামাল বিভিন্ন সময় সরকারের নানামুখী কঠোর সমালোচনা করে থাকেন। তারা দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম ও সংস্থার কাছে সরকারবিরোধী বিরূপ মন্তব্য করে থাকেন।”