রোববার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে জনতার প্রতিরোধ সংঘটনের ক্ষেত্রে সাতই মার্চের ভাষণ একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।
”বাংলাদেশ জন্ম নিয়েছিল। শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং তাকে নয় মাস পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে রাখা হয়েছিল। কিন্তু মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের জন্য প্রবল সমর্থন ও সংকল্প নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল।”
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) স্বাধীনতাকামী ৭ কোটি মানুষকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
তার ওই ভাষণের ১৮ দিন পর পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি নিধনে নামলে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সেই সশস্ত্র সংগ্রামের পর আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের পর বাঙালি যেভাবে বাড়িতে আর অফিসে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিল, যেভাবে মুক্তিবাহিনী দ্রুততার সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সে কথাও তুলে ধরেন ইতিহাসবিদ জার্ভিস।
সাতই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব বিবেচনায় জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো ২০১৭ সালে এ ভাষণকে ‘ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজের’ মর্যাদা দেয়।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দেওয়া ভিডিওবার্তায় ’এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’ শীর্ষক বিশেষ স্মারক বক্তৃতা দেন হেলেন জার্ভিস।
তিনি বলেন, “পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার তীর থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের সমুদ্র আর সুন্দরবন কিংবা পাহাড়- পূর্ব পাকিস্তানের সব জায়গায়, এমনকি সারা বিশ্বে এই ভাষণ অনুরণিত হয়েছিল।”
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাক্রম তুলে ধরে জার্ভিস বলেন, “ভারত থেকে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সহায়তা নিয়ে বাঙালি দখলদার বাহিনীকে পশ্চিম পাকিস্তানে বিতাড়িত করেছিল। এই বিজয়ের মূল্যও ছিল অনেক এবং পঞ্চাশ বছর পার হলেও বাংলাদেশের মানুষ সেই মূল্য দিচ্ছে।”
একই অনুষ্ঠানে মাসব্যাপী বিশেষ প্রদর্শনী ’বিশ্বজুড়ে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত ভাষণ’ উদ্বোধন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।