রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বলেন, বিষয়টি তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও জানিয়েছেন।
এমপি নাজিম উদ্দিনের অভিযোগ, রোববার দুপুর ১২টার দিকে গৌরীপুরে ৭ মার্চের সরকারি ও দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ‘গৌরপুরের পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী’ তার গাড়িবহরে হামলা চালায়। তার সাথে থাকা দলীয় নেতাকর্মীদের মারধর করে আহত করে হামলাকারীররা।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা পরিষদে নিয়ে যায় বলে তার ভাষ্য।
মেয়র রফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে এর আগেও ‘প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলেন’ অভিযোগ করে নাজিম উদ্দিন বলেন, “সে ভয়ঙ্কর লোক। শুভ্র হত্যা মামলার আসামি। নতুন করে সে আরও হত্যাকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করছে, যাতে করে শুভ্র হত্যাকাণ্ড আড়ালে পড়ে যায়।
“এতে করে আমার এবং আমার ছেলের প্রাণ সংশয় রয়েছে। বিষয়টি স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। সংসদ অধিবেশনেও মেয়রের শাস্তি দাবি করে ঘটনাটি উত্থাপন করা হবে।”
মেয়র রফিক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই গৌরীপুরে ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন’ বলেও অভিযোগ করেন এই সংসদ সদস্য।
গত ৩০ জানুয়ারি মোবাইল ফোনে ‘প্রাণনাশের হুমকি’ পাওয়ার পর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট হত্যা মামলা থাকার পরও তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। কোন স্বার্থের কারণে অভিযোগ দেওয়ার পরও মেয়র রফিক এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না?”
গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. হেলাল উদ্দিন, তথ্য ও গবষণা সম্পাদক জসীম উদ্দিন, অচিন্তপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, পরাজিত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম হবিসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, রোববার বিকালে গৌরীপুরের নব-নির্বাচিত পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম তার বাসবভনে সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কার্যালয়ে ফেরার পথে ‘দুষ্কৃতকারীরা’ তাকে লক্ষ্য করে ‘গুলি ছোড়ে’। এ সময় তার অনুসারীদের দুজন আহত হন।
এমপি ও পৌর মেয়রের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে গৌরীপুর থানার ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, “আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে গুলির ঘটনা ঘটেনি। সার্বিক বিষয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত ১৭ অক্টোবর গৌরীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান শুভ্রকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়। বর্তমানে সৈয়দ রফিকুল উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।