সোমবার মঙ্গলবার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আজকে একটি
পত্রিকায় ছাপিয়েছে ৯ মার্চ, ১৯৭১ সালে মাওলানা ভাসানী পল্টনে ময়দানে কী বললেন? তিনি
বললেন, স্বাধীনতা মেনে নিন, ইয়াহিয়াকে ভাসানী। আর কালবিলম্ব না করে স্বাধীনতা দিয়ে
দিন।
“একদিনে, একজনের ভাষণে স্বাধীনতা আসেনি- এই কথাটাই আমরা বার
বার বলতে চেয়েছি। আমাদের সেই বক্তব্যের পরে সরকার প্রধান ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক কথা বলেছেন,
যেটা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।”
ফখরুল বলেন, “কেন এই মিথ্যাচার? এর কারণটা কি? একটাই কারণ
এখানে শুধুমাত্র তাদের যে লক্ষ্য সেই লক্ষ্যকে চরিতার্থ করতে চায়, তাদের বক্তব্যকে
প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে, একজন মাত্র ব্যক্তি, তার একক ঘোষণায়, একক কথায় দেশ মুহূর্তের
মধ্যে স্বাধীন হয়ে গেছে।”
তিনি বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যদি স্বাধীনতার
ঘোষণা না দিতেন তাহলে কি যুদ্ধ শুরু হত? হত না। উনার স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে এবং
যুদ্ধ ঘোষণার মধ্য দিয়ে, ‘উই রিভোল্ট’ এই কথার মধ্য দিয়ে এবং প্রবাসী সরকার গঠন হওয়ার
অনেক আগেই হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়াতে জিয়াউর রহমান সাহেব, আমাদের এমএজি ওসমানীসহ সেক্টার
কমান্ডাররা সবাই বসে বৈঠক করে ন্যাশনাল কমান্ড ফর লিবারেশন ওয়ার তৈরি করে ফেলেন। সেটা
৪ এপ্রিল।”
১৯৭১ সালের ৯ মার্চ পল্টন ময়দানে মাওলানা আবদুল হামিদ খান
ভাসানী বাংলাদেশের স্বাধীনতা পাকিস্তানি শাসকদের মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
দিনটি উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির স্বাধীনতা
সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অবশ্যই আপনাদের
অবদান আছে। অবশ্যই বিরাট বিরাট অবদান আছে। ১৯৭১ সালে আপনাদের যে অবদান, সেই অবদান কেউ
কোনোদিন আমরা অস্বীকার করি না।
“একই সঙ্গে আপনারা যখন মূল নায়কের অবদানটাকে অস্বীকার করেন
সেটাকেও আমরা কোনোমতেই মেনে নিতে পারি না। আমি আগেও বলেছি, শহীদ জিয়ার খেতাব তুলে
নেবেন, নিন। কে খেতাব পেল, কে পেলে না তাতে কিছু আসে যায় না শহীদ জিয়ার। তিনি এদেশের
মানুষের অন্তরে রয়েছেন।”
আবদুল আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বের প্রশংসা করেন মির্জা
ফখরুল।
স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার
মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমরা ৭ মার্চ পালন করেছি, আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “সেদিন
সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের একটি সরকারি প্রোগ্রামে তিনি বললেন, ৭ মার্চের ঘোষণাই স্বাধীনতার
ঘোষণা। আর গতকাল তিনি আরেকটি তথ্য দিয়েছেন যে, জিয়াউর রহমান ২৫ ও ২৬ মার্চ মানুষ হত্যা
করেছে। ইতিহাস যে কি পরিমাণে বিকৃত বা নিজের খেয়াল মতো বলা যায়, সরকারে আছে, যা ইচ্ছা
বলা যায়।”
জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় আলোচনা সভায়
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান
মোস্তফা জামাল হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বক্তব্য রাখেন।