সিটি
করপোরেশনগুলোর নির্বাচন বাতিলের দাবিতে বুধবার এক সমাবেশে তিনি এই দাবি করেন।
ফখরুল
বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন তো আজ্ঞাবহ ক্রীতদাসের চেয়েও খারাপ। সরকারকে কিছু বলতে
হয় না, তার আগে বলে দেয়- ‘খুব ভালো নির্বাচন হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে’।
“এই
নির্বাচন কমিশনের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিৎ। নির্বাচন কমিশন নতুন করে যোগ্য ব্যক্তিদের
দ্বারা গঠন করতে হবে।”
একই
সঙ্গে সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিও জানান
বিএনপি মহাসচিব।
ঢাকা
মহানগর (উত্তর ) বিএনপির উদ্যোগে খিলগাঁও তালতলা সিটি করপোরেশন সুপার মার্কেটের সামনের
সড়কে এই সমাবেশ হয়।
মহামারীর মধ্যে বিএনপির নানা কর্মসূচি জাতীয় প্রেস ক্লাব
এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। দীর্ঘদিন পর এরকম সমাবেশ করল দলটি।
ঢাকা,
চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনের প্রসঙ্গ ধরে ফখরুল বলেন,
“আমরা কী ভোট দিতে গেলে ভোট দিতে পারি? এই যে আমাদের ছয়জন মেয়র প্রার্থী এখানে বসে
আছেন, তারা কেউ ভোট করতে পারেননি।”
তার
প্রতিবাদে বিভিন্ন মহানগরীতে সমাবেশ করতে গিয়ে বাধা পেয়ে ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন,
“কেন এত ভয়? জনগণের যে কথা বলার অধিকার, সেই অধিকার বন্ধ করে দেওয়া কেন? কারণ আমরা
জানি। জনগণ যদি ভোট দেয়, ভোট দিতে পারে, তাহলে আপনারা কোনোদিনই আর ক্ষমতায় আসতে পারবেন
না।”
ডিজিটাল
নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি
বলেন, “এই সরকার খুব দুর্বল সরকার। এত দুর্বল
যে তাদের নিজেদেরকে রক্ষা করবার জন্য নতুন নতুন আইন তৈরি করতে হয়।
“তারা
যন্ত্র নিয়ে এসেছে ইসরাইল থেকে। যে দেশের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই। যেটা আবার
আল-জাজিরা টেলিভিশন আবার সেটা প্রচার করে দিয়েছে। সেই প্রচারে আমরা বিস্ময়ে লক্ষ্য
করলাম, আমাদের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে।”
ডিজিটাল
নিরাপত্তা আইনে নিপীড়নসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কারণেই রাষ্ট্রের
ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্বাধীনতার
সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিএনপির কর্মসূচির সমালোচনার জবাবে ফখরুল বলেন, “শুধু একজনের
জন্য, শুধু একটি গোষ্ঠির জন্য, শুধু একটি পরিবারের জন্য, একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এদেশে
স্বাধীনতা আসে নাই।”
ভারতের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের ঢাকা সফরকালে সীমান্ত হত্যা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার
প্রতিবাদও জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি
আরও বলেন, “আমরা চাই যে, কানেকটিভি হোক, বাণিজ্য বাড়ুক, প্রসার ঘটুক। কিন্তু আমি পোর্ট
দিয়ে দেব, আমার এয়ারপোর্ট ব্যবহার করতে দেব, আমার রাস্তা ব্যবহার করতে দেব, কিন্ত বিনিময়ে
আমি ফেনী নদীর পানিরও হিস্যা পাব না, তিস্তা নদীর পানিও হিস্যা পাব না। এটা হতে পারে
না।”
সমাবেশ
থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার পরিবেশ তৈরি করতে
দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল।
সমাবেশে
অংশগ্রহণকারীরাও ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’ দাবিতে মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এই
সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল মোহাম্মদপুরের শহীদ পার্কে। রাতে পুলিশ সেখানে আপত্তি
জানালে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করে খিলগাঁওয়ে আনা হয়।
সমাবেশে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “এই সরকারের দুরভিসন্ধির কোনো সীমা
নাই। তারা ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু বোঝে না। একমাত্র চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করেই তারা ক্ষমতায়
টিকে আছে, টিকে থাকার চেষ্টা করছে।”
ঢাকা
দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন, উত্তর সিটি
করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
মুন্সি
বজলুল বাসিত আনজু ও এএফএম আব্দুল আলিম নকির পরিচালনায় সমাবেশে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে
বরিশালের মজিবুর রহমান সারোয়ার, খুলনার নজরুল ইসলাম মনজু, চট্টগ্রামের শাহাদাত হোসেন,
রাজশাহীর মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলও বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও
বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বরকত
উল্লাহ বুলু, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির
খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শ্যামা ওবায়েদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, শিরিন সুলতানা,
আবদুস সালাম আজাদ, কাজী আবুল বাশার, হাবিবুর রশীদ হাবিব, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন
টুকু, এসএম জাহাঙ্গীর, আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মুস্তাফিজুল
করীম মজুমদার।
সমাবেশে
হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, আজিজুল বারী হেলাল, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল,
মীর সরফত আলী সপু, আমিনুল হক, শামীমুর রহমান শামীম, অনিন্দ্র ইসলাম অমিত, শহিদুল ইসলাম
বাবুল, আমিরুজ্জামান শিমুল, মামুন হাসান, রাজিব আহসান, খন্দকার আবু আশফাক, শায়রুল কবির
খান উপস্থিত ছিলেন।