অবশেষে
আদালতের আদেশে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন যশোর
কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান।
এর আগে
যুগ্ম দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক তাকে ওই মামলার
দায় থেকে অব্যহতির আদেশ দেন।
বিনা
দোষে সাজাখাটা মিন্টু মোল্যা শার্শা উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামের মহর আলী মোল্যার
ছেলে। তিনি পেশায় ভ্যানচালক।
ঋণখেলাপি
মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি একই গ্রামের মহর আলীর ছেলে আশরাফ আলীর তাকে কারাগারে
পাঠানো হয়েছিল।
যশোর
ব্লাস্টের প্যারালিগ্যাল প্রকল্প অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা জানান, গত ৬ মার্চ
সেবা সুরক্ষা বিষয়ক দুজন উপসচিব যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিদর্শনে আসেন । এ সময়
তারা জানতে পারেন প্রকৃত আসামির পরিবর্তে নিরীহ এক ব্যক্তি কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
এরপর
তারা যশোরের অর্থঋণ আদালতকে বিষয়টি অবহিত করেন তারা। পরে মিন্টু মোল্যাকে মুক্ত
করতে আইনগত পদক্ষেপ নেন তারা।
তারা
দেখতে পান, আসামি আশরাফ আলীর ছবির সাথে মিন্টু মোল্যার ছবির কোনো মিল নাই। এছাড়া মিন্টু
মোল্যা নিরক্ষর হওয়ায় ঠিকমতো স্বাক্ষরও করতে পারেন না। এ কারণে আশরাফ আলীর সাথে
তার স্বাক্ষরের মিল পাওয়া যায়নি।
আদালতে
এসব তথ্য উপস্থাপন করার পর শুনানি শেষে বিচারক মিন্টু মোল্যাকে ওই মামলার দায় থেকে
অব্যহতির আদেশ দেয়, একই সাথে অন্য কোনো মামলায় আটক রাখার প্রয়োজন না হলে তাকে
অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র তত্ত্বাবধায়ককে আদেশ
দেয় বলেন তিনি।
বিনা
দোষে সাজা খেটে বেরিয়ে মিন্টু মোল্যা বলেন, “২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে বেনাপোল
পোর্ট থানার মাসুম দারোগা এবং কালো কবির চৌকিদার তাকে আসামি আশরাফ আলী বলে বাড়ি
থেকে ধরে আনেন।”
আটকের
সময় তিনি আসামি আশরাফ আলী বারবার বললেও নয় পুলিশ সে কথা শোনেনি বলে অভিযোগ তার। ধরে
এনে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। সেই থেকে চার মাস সাজা ভোগ করেছেন।
কয়েকদিন
আগে একজন সচিব কারাগারে এসেছিলেন। তিনি তাকে বিনাদোষে সাজা ভোগ করার কথা বলেছিলেন।
এরপর আদালত থেকে বৃহস্পতিবার ওই মামলায় তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।
স্বামী
মুক্তি পাচ্ছেন খবর পেয়ে বিকালে মাকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারে ছুটে আসেন
ফাহিমা বেগম।
ফাহিমা
জানান, আশরাফ আলী নামে এক ব্যক্তি ব্যাংক থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু
ঋণ পরিশোধ না করায় তার এক বছরের দণ্ড হয়। আশরাফ আলীর বাবার নামও মহর আলী। তার
স্বামীর বাবার নামও মহর আলী। শুধুমাত্র বাবার নামের সাথে মিল থাকায় বিনাদোষে তার
স্বামীকে চার মাস সাজা ভোগ করতে হয়েছে।
এদিকে,
এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান এ ধরনের কোনো ঘটনা জানেন না বলে
জানিয়েছেন।
এক
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের থানায় একজন এসআইয়ের এবং একজন এএসআইয়ের নাম মাসুম।
কে মিন্টু মোল্যাকে ধরে এনেছিলেন তাও জানেন না তিনি।