ক্যাটাগরি

কুমিল্লায় বাসে আগুনে পুড়ে নিহত ২

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় উপজেলার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে
এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে বলে দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি জহিরুল হক জানান।

গ্যাস নেওয়ার পরপরই বাসটিতে আগুন ধরে জানিয়ে তিনি বলেন,
“বাসের গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।”

ওসি জানান, দগ্ধ অন্তত ১২ যাত্রীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বাকিদের দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা
কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, আহতদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কয়েকজনকে ঢাকায়
পাঠানো হয়েছে।

নিহতরা হলেন- দাউদকান্দির তিনপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম
(৭৫) এবং তার না‌তি সাফিন (৫)।

দগ্ধ ১২ জনকে রাত ৮টার দিকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন
অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়।

তারা হলেন- ওমর ফারুক (৫০), গোলাম হোসেন (৭৫), মোহাম্মদ
মিজান (৫২), কহিনুর বেগম (৩২), সানজানা (১৩), সামছুন্নাহার (৭০), নুরুল ইসলাম (৭৫),
মহসিনা (৩৮), তাসলিমা (৬), হালিমা বেগম (৬১), তাহিয়া (১০) ও আবদুর রহিম (৫৫)।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বলেন, ১২ জনের মধ্যে গোলাম হোসেনের শরীরের ৩১ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
ওমর ফারুক ও মিজানের দেহের ৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

বাকি নয়জন ‘খুবই সামান্য দগ্ধ’
হয়েছেন জানিয়ে বাচ্চু মিয়া বলেন, তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।

ওসি জহিরুল হক জানান, মতলব এক্সপ্রেসের বাসটি চাঁদপুরের
মতলব যাচ্ছিল। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলে বাসটিতে আগুন ধরে
যায়।

পরে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে
আনলে আশপাশের বাস ও দোকানগুলো রক্ষা পায় বলে ওসি জানান।

আহত বাসযাত্রী স‌ফিক জানান, বাস‌টি গৌ‌রীপুর বাস স্ট্যা‌ন্ডে
পৌঁছার কিছুক্ষণ আ‌গে ফিলিং স্টেশন থে‌কে গ‌্যাস নিয়েছিল। যাত্রী নামা‌তে গৌ‌রীপুর
বাসস্ট‌্যা‌ন্ডে থামার পরপরই আগুন ধরে।

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রওশন আরা
বেগম তার নাতি সাফিনকে হারিয়ে কান্নায় চোটে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলছিলেন।

সেখানে ভর্তি দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া রিয়াদ হোসেন বলেন, তিনি
বাসের পেছনের আসনে বসা ছিলেন, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পেছনে আগুন চলে আসে। বাসের জানালা
দিয়ে বের হওয়ার সময় কাচে তার হাত কেটে যায়।

দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম খান
দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নিহত প্রত্যেক পরিবারকে লাশ দাফনের জন্য
২০ হাজার টাকা এবং আহতদের প্রত্যেকের জন্য ১০ হাজার টাকা করে নগদ দেন।

দুর্ঘটনার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় সাত কিলোমিটারজুড়ে
তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পোহান।

কুমিল্লা থেকে দাউদকান্দিগামী পাপিয়া পরিবহনের যাত্রী কুমিল্লার
ভিক্টোরিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী কুমিল্লার তিতাস উপজেলার গাজীপুর গ্রামের
আনিকা সুলতানা ও  চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সাচার
গ্রামের শিক্ষার্থী জাকিয়া ও তাহমিনা বলেন, রাতের বেলায় যানজটে আটকে থাকলেও নিরাপত্তার
ঝুঁকির কারণে তারা হেঁটেও রওনা হতে পারছিলেন না।