শুক্রবার সন্ধ্যায়
বাংলাদেশ টেলিভিশনের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নতুন তালিকাভুক্ত শিল্পীদের সংবর্ধনা
অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে ‘গৃহবন্দি’ করে রাখা হয়েছে, দেশে তার সুচিকিৎসা ‘হচ্ছে
না’, দেশের বাইরেও নিতে দেওয়া হচ্ছে না- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম
আলমগীরের এসব অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা তথ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চান।
উত্তরে বিএনপি নেতাদের খালেদা জিয়ার ‘হাঁটুর ব্যথা নিয়ে
রাজনীতি না করার’ অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন,
“আদালত থেকে জামিন বা খালাস না পাওয়া সত্ত্বেও খালেদা জিয়াকে যে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে মুক্তি দিয়ে ঘরে থাকার
ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, সেজন্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের উচিত ছিল
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেওয়া। সেটি না দিয়ে বরং তিনি বলছেন, তাকে বিদেশ নিয়ে
যেতে হবে।
“বাংলাদেশে তো অনেকেরই চিকিৎসা হয়, আমাদের অনেক এমপি এই
করোনাকালে মৃত্যুবরণ করেছেন, কাউকে কিন্তু বিদেশ নিয়ে যাওয়া হয়নি। অনেকেই এদেশে
চিকিৎসা করে ভালো হয়েছেন।”
খালেদা জিয়া এবং তার দলের এত ‘বিদেশপ্রীতি’ কেন- এমন প্রশ্ন
রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার যে কথাগুলো বলা হচ্ছে,
এগুলো বহু বছরের পুরনো অসুবিধা। যে আর্থাইটিসের সমস্যা, সেটি বিশ বছরের পুরনো। সেই
সমস্যা নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বিএনপির মত একটি বড় দলের
চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেছেন। একই সমস্যাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার দেখানো
সমীচিন নয়।
“খালেদা জিয়া হচ্ছেন একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, তিনি আদালত
কর্তৃক খালাস পাননি, আদালত থেকে জামিনও পাননি। খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের
প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দয়া পরবশ হয়ে প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে তাকে মুক্তি
দিয়েছেন ছয় মাসের জন্য। যেটি একদফা বাড়ানো হয়েছে, আরো একদফা বাড়ানোর জন্য তারা
আবেদন করেছেন, এটি প্রক্রিয়াধীন আছে। উনাকে বিদেশেই নিয়ে যেতে হবে, এই প্রশ্ন কেন?
চিকিৎসা তো বাংলাদেশেও আছে।”
বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নতুন তালিকাভুক্ত শিল্পীদের
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যত বেশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হবে, যত
বেশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে আমাদের তরুণ ও যুবকরা সম্পৃক্ত হবে, তত বেশি
তাদের মননশীলতার বিকাশ
হবে। আজকে তরুণরা যে জঙ্গিবাদের সাথে জড়িয়ে পড়ছে, মাদকাসক্ত হচ্ছে, এগুলো থেকে
রক্ষা করার ক্ষেত্রেও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে।
“জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ বিভিন্ন জায়গায় মাথাচাড়া দিয়েছে, আমরা
অতীতে বিশ্লেষণ করে দেখেছি, যে সমস্ত জায়গায় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বেশি, সেখানে
জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে ঘিরে যেন ব্যাপক
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও উৎসব হয়।”
তথ্যমন্ত্রী জানান, দেশের অন্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও বাংলাদেশ
টেলিভিশনের আরো ছয়টি কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে; শিগগিরই কার্যক্রম শুরু
হবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে
রাশেদ হাসান ও আঁখি মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিটিভি
চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি ছিলেন
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, তথ্য মন্ত্রণালয়ের
অতিরিক্ত সচিব মিজান উল আলম এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার।