ক্যাটাগরি

তরঙ্গ পেয়ে সেবার মান বাড়ানোর পরিকল্পনা বাংলালিংকের

সোমবার বাংলালিংকের প্রধান কার্যালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

এরিক বলেন, নিলামে তরঙ্গ বরাদ্দের পর গ্রাহক প্রতি প্রতি মেগাগহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহার হিসাবে বাংলালিংক বেসরকারি অপারেটদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। ইন্টারনেট গতিতে বাংলালিংকের যে সুনাম আছে তা ধরে রাখা ও আরো উন্নত করতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

বিটিআরসির হিসাবে, নিলামের আগে গ্রামীণফোনের প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিপরীতে ছিল ২ দশমিক ১৬ মিলিয়ন গ্রাহক, বাংলালিংক ১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন, রবি ১ দশমিক ৪০ মিলিয়ন এবং টেলিটক দশমিক ২২ মিলিয়ন গ্রাহক ছিল ।

নিলামের পর গ্রামীণফোনের প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিপরীতে ১ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন গ্রাহক, বাংলালিংক দশমিক ৮৯ মিলিয়ন, রবি ১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন এবং টেলিটক কোনো তরঙ্গ না নেওয়ায় আগের অবস্থানেই রয়েছে।  

গ্রাহক প্রতি প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গ বেশি থাকায় সেবার মান আরো বৃদ্ধি করা যাবে জানিয়ে বাংলালিংক সিইও বলেন, “এ সুবিধা থাকায় গ্রাহকদের আরো উন্নত ভয়েস ও ইন্টারনেট ডেটা সেবা দেওয়া যাবে।”

গত ৮ মার্চ তরঙ্গ নিলামে ১৮০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের এর মধ্যে ২ দশমিক ২ মেগাহার্টজ তরঙ্গের দুটি ব্লক নিয়ে মোট ৪ দশমিক ৪ মেহাহার্টজ তরঙ্গ নেয় বাংলালিংক। ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নেয় বাংলালিংক। সব মিলে বাংলালিংক তরঙ্গ নেয় ৯ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ।

বিটিআরসির হিসাবে, গ্রামীণফোনের হাতে সব মিলিয়ে মোট ৩৭ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ছিল এতদিন। নিলামে দুই ব্যান্ডের ১০ দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ কেনায় গ্রামীণফোনের হাতে মোট ৪৭ দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ হচ্ছে। 

এয়ারটেলের সাথে একীভূত হওয়ার পর রবির মোট তরঙ্গের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৩৬ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ। সোমবার আরও ৭ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ কিনে তাদের হাতে মোট তরঙ্গ দাঁড়াল ৪৪ মেগাহার্টজ।

বাংলালিংকের হাতে ছিল ৩০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ, এখন তা বেড়ে ৪০ মেগাহার্টজ হল। আর রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটক সোমবারের নিলাম থেকে খালি হাতে ফেরায় আগের মতই ২৫ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ থাকল তাদের।

নতুন বিনিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে এরিক বলেন, “আমাদের ১০ হাজার বিটিএস রয়েছে। এর মধ্যে ৯২ শতাংশ ফোরজি বিটিএস রয়েছে। আগামীতে বিটিএস সংখ্যা ও নেটওয়ার্ক কাভারেজ বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।“

সিলেট, ময়মনসিংহসহ উত্তরবঙ্গে কাভারেজ বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নতুন যে তরঙ্গ কেনা হয়েছে তার জন্য ১ হাজার কোটি খরচ হয়েছে। বিটিআরসি থেকে এ তরঙ্গ বুঝে পাওয়া মাত্র নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে।”

ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা ও বিশ্লেষণে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ‘ওকলা’ পরিচালিত নিরীক্ষায় গত বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের দ্রুততম নেটওয়ার্ক ‘স্পিডটেস্ট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে বাংলালিংক। অপর প্রতিষ্ঠান ওপেন সিগনালের নিরীক্ষায়ও প্রথমে রয়েছে বাংলালিংক।

ইন্টারনেট গতি সুনাম ধরে রাখার মূল লক্ষ্য জানিয়ে এরিক বলেন, “আমরা গ্রাহকদের সবচেয়ে উন্নত ইন্টারনেট স্পিড দেব এবং আগামীতে এ স্পিড ধরে রাখতে চাই। নতুন তরঙ্গ হাতে আসা মাত্র এ সবোর মান আরো উন্নত হবে।”

বর্তমানে ৩ কোটি ৫৯ লাখের বেশি গ্রাহকের মধ্যে কত গ্রাহক বাংলালিংক ইন্টারনেট ব্যবহার করছে জানতে চাইলে এরকি বলেন, “কতজন ফোরজি গ্রাহক রয়েছে তা বলা যাচ্ছে না তবে ২০২০ সালে বাংলালিংক ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ১১৬ শতাংশ বেড়েছে এবং এ খাতে আয় বৃদ্ধি হচ্ছে।“

বাংলালিংকের ইন্টারনেট ডেটার দাম কমানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে সিইও বলেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের মূল্যে তুলনামূলক কম। তাই দাম কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।

গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আবার ফিরে আসার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কোন অবস্থানে রয়েছি তা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না মূল বিষয় হচ্ছে সেবার মান বৃদ্ধি করা।”

এ সময় বাংলালিংক ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা হাসনাত রেজা মাহবুব, বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস অ্যান্ড সাস্টেইন্যাবিলিটি আংকিত সুরেকা উপস্থিত ছিলেন।