আর পাঁচ আসামির সাজা
কমিয়ে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন। এক আসামিকে খালাস দিয়েছে দেওয়া হয়েছে।
মামলার ডেথ রেফারেন্স
(মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) ও দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিলের শুনানি
শেষে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ
বৃহস্পতিবার এ রায় দেয়।
হাই কোর্টে রায়ে মৃত্যুদণ্ড
বহাল থাকা পাঁচ আসামি হলেন- কাপাসিয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবদুল আলীম, যুবদলের
কর্মী জজ মিয়া, আল আমিন, ছাত্রদলের কর্মী বেলায়েত হোসেন ও ফারুক হোসেন।
আর মৃত্যুদণ্ড থেকে
সাজা কমিয়ে যাদের যাবজ্জীবন হয়েছে তারা হলেন- কাপাসিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি
হালিম ফকির, যুবদলের কর্মী মাহবুবুর রহমান ও আতাউর রহমান, ছাত্রদলের কর্মী ফরহাদ হোসেন
ও কাপাসিয়া কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক জুয়েল।
যুবদলের কর্মী জয়নাল
আবেদিনকে হাই কোর্ট খালাস দিয়েছে।
আদালতে আসামিপক্ষে
শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান ও সারোয়ার আহমেদ, আব্দুল
বারেক চৌধুরী ও রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী হাফিজুর রহমান।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি
করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার
দাস, সৈয়দা শবনম মোস্তারী ও তরিকুল ইসলাম ইরা।
এই ১১ জনের মধ্যে ৬
জন কারাগারে রয়েছেন। জজ মিয়া, আল আমিন, হালিম ফকির ও মাহবুবুর রহমান পলাতক বলে আইন
কর্মকর্তা বশির আহমেদ জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে যাদের যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে, তারা ঘটনাস্থলে
উপস্থিত ছিলেন এবং জালাল উদ্দিন সরকার হত্যায় সহযোগিতা করেছিলেন।
“কিন্তু তারা কোথায়
কোথায় আঘাত করেছেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। এই বিবেচনায় তাদের যাবজ্জীবন
দিয়েছে হাই কোর্ট।
“যাদের মৃত্যুদণ্ড
বহাল রাখা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে হত্যার অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে। তাদের
কেউ পায়ের শিরা কেটেছে, কেউ মাথায় আঘাত করেছে, কেউ হাতের শিরা কেটেছ। আর যাকে খালাস
দেওয়া হয়েছে, এজাহারে তার নাম ছিল না। এমনকি তার বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষীও ছিল না। সে
কারণে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।”
রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়কে
‘যথাযথ’ বিবেচনা করছে জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ বলেন, তারা আপিল
করবেন না।
রাজনৈতিক বিরোধের জেরে
আসামিরা ২০০৩ সালের ১৭ অগাস্ট পাবুর বলখেলা বাজার এলাকায় কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের
সাবেক সভাপতি জালাল সরকারকে (৩৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে।
ওই হত্যাকাণ্ডের পর
নিহতের বড়ভাই মিলন উদ্দিন সরকার বাদি হয়ে কাপাসিয়া থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০০৪
সালে ২৩ জানুয়ারি ১১ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এ মামলার শুনানিতে
মোট ২২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি শোনেন বিচারক। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২০১৫ সালের ৩০
নভেম্বর গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. ফজলে এলাহী ভূঁইয়া রায় ঘোষণা করেন।
বিচারিক আদালত রায়ে
১১ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।