ক্যাটাগরি

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল

আদেশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে তাদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটির্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। আর পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করে আইনজীবী কামরুল ইসলাম।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইন অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া কোনো ইটভাটা চলতে পারে না। চললে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে অনেক ইটভাটা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।”

এ আইনজীবী বলেন, “হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ইটভাটার মালিকরা আপিল করলেও সর্বোচ্চ আদালত তাতে সাড়া দেয়নি। স্থিতাবস্থা বা স্থগিতাদেশ পায়নি তারা। তারপরও এসব অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে দুইবার সময় নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সময় দিয়ে আদালত আজ আদেশের জন্য রেখেছিলেন। আজ আবার জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সময় আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত তাদের সময় না দিয়ে আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন।”

আগামী ৮ এপ্রিল পরবর্তী আদেশের জন্য তারিখ রাখা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।

মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক আবেদনে হাই কোর্ট গত বছর ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা সাতদিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেয়।

সেই সঙ্গে যেসব ইটভাটা কাঠ ও পাহাড়ের মাটি ব্যবহার করছে তাদের তালিকা দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

হাই কোর্টের এ আদেশের পর চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক একটি কর্মসূচি তৈরি করে ইটভাটা বন্ধ করার জন্য একজন নির্বাহী হাকিম নিয়োগ দেন।

এদিকে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে হাই কোর্টের আদেশের স্থগিত বা স্থিতাবস্থা চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন চট্টগ্রামের লোহাগড়ার অবৈধ ১১ ইটভাটার মালিক।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি এসব আবেদন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। কিন্তু চেম্বার বিচারপতি হাই কোর্টের আদেশে হস্তক্ষেপ না করে আবেদনগুলো শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আবেদনগুলোর ওপর আগামী ১৬ অগাস্ট শুনানির তারিখ রয়েছে।   

আদালতের আদেশ যথাযথভাবে প্রতিপালন না করায় নির্বাহী হাকিম এসএম আলমগীর ও জিল্লার রহমানের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন করে এইচআরপিবি।

সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি হাই কোর্ট ফের আদেশ দেয়। ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয় ওই আদেশে।

কিন্তু আদালতের আদেশ প্রতিপালন না করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বারের মত সময় চায়।

ওইদিন আদালত সময় মঞ্জুর করে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছিল।

আদালত পর্যবেক্ষণ বলেছে, সংশ্লিষ্ট বিবাদিরা আদালতের নির্দেশনা না মেনে সময় ব্যয় করছেন। সেই সঙ্গে অবৈধ ইটভাটা মালিকদের তাদের অবৈধ কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব হচ্ছে। যার ফলে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়ছে।