ক্যাটাগরি

রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জিতে সমতায় ভারত

আহমেদাবাদের
নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার
চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ভারতের জয় ৮ রানে। ১৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ইংলিশরা থামে ১৭৭ রানে।

শেষ ওভারে
ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ২৩ রান। প্রথম ৩ বলে এসে যায় ১৩ রান। তবুও পেরে ওঠেনি ওয়েন
মর্গ্যানের দল। শার্দুল ঠাকুরের শেষ ৩ বলে তারা নিতে পারে কেবল ১ রান।

তিন নম্বরে নেমে ৩১
বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন সূর্যকুমার। ১৮ বলে ৩৭ রান করেন শ্রেয়াস। দারুণ
বোলিংয়ে ১৬ রানে ২ উইকেট নেন পান্ডিয়া।

সিরিজে এই
প্রথম আগে ব্যাট করে জিতল কোনো দল। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এখন ২-২ সমতা। একই
মাঠে আগামী শনিবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে দল দুটি।

প্রথম তিন ম্যাচের
ধারাবাহিকতায় এই ম্যাচেও টস জয়ী অধিনায়ক নেন বোলিং। লেগ স্পিনার
আদিল রশিদকে ম্যাচের প্রথম বলেই ছক্কায় উড়ান রোহিত শর্মা। এক বল পর মারেন
বাউন্ডারি। কিন্তু আগের ম্যাচের মতো আবারও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ ভারত ওপেনার।
জফ্রা আর্চারের স্লোয়ারে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ১২ রানে।

সিরিজের দ্বিতীয়
ম্যাচে অভিষেকে ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পেয়েই পরের ম্যাচে বাদ পড়েছিলেন সূর্যকুমার।  ইশান কিষাণের চোটে ফিরেন এ দিন। ডানহাতি
ব্যাটসম্যান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুখোমুখি প্রথম বলেই ছক্কায় ওড়ান আর্চারকে।

প্রথম তিন
ম্যাচের দুটিতে আগে ব্যাটিং করে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ভারতের রান ছিল যথাক্রমে
২২/৩ ও ২৪/৩। এবার হয়েছে উন্নতি, ৪৫/১।

প্রথম তিন ম্যাচে মাত্র
১ রান করা লোকেশ রাহুল এবার স্পর্শ করেন দুই
অঙ্ক। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি (১৭ বলে ১৪)।

টেকেননি
আগের দুই ম্যাচে ফিফটি করা অধিনায়ক বিরাট কোহলি। রশিদকে বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়ে গুগলিতে
পরাস্ত হয়ে স্টাম্পড হন ১ রান করে।

ফিফটির পথে সূর্যকুমার যাদবের একটি শট। ছবি: বিসিসিআই

ফিফটির পথে সূর্যকুমার যাদবের একটি শট। ছবি: বিসিসিআই

সূর্যকুমার পরে খেলেন
দারুণ সব শট। ৬ চার ও ২ ছক্কায় ফিফটি স্পর্শ করেন ২৮ বলে। তাকে সঙ্গ
দেন রিশাভ পান্ত। এই দুজনের ব্যাটে বাড়তে থাকে রান।

স্যাম কারানকে ছক্কায়
ওড়ানোর পর আবার একই
চেষ্টায় সূর্যকুমার থামেন দাভিদ মালানের নিচু ক্যাচে। এই আউট নিয়ে অবশ্য মিশে থাকল
বিতর্কের রেশ। টিভি রিপ্লে দেখে মনে হচ্ছিল, ডিপ স্কয়ার লেগে
মালান ক্যাচ নেওয়ার সময় বল মাটি স্পর্শ করেছিল। মাঠের আম্পায়ারের  ‘সফট সিগন্যাল’ ছিল আউট। বেশ কিছুক্ষণ রিপ্লে দেখে সেটি বদলানোর যথেষ্ট প্রমাণ
পাননি তৃতীয় আম্পায়ার।

সূর্যকুমারের ৫৭ রানের ইনিংসটি সাজানো ৬ চার ও ৩ ছক্কায়। ৪টি চারে
৩০ রান করে থামেন পান্ত। পান্ডিয়া পারেননি পরিস্থিতির দাবি মেটাতে। বেন স্টোকসের
অসাধারণ ক্যাচে ফেরেন তিনি ৮ বলে ১১ রান করে।

শেষ ওভারের
প্রথম বলে বিদায় নেন শ্রেয়াস। ১৮ বলে ৫ চার ও একটি ছক্কায় সাজান ৩৭ রানের ইনিংস। এই
ওভারে দুটিসহ ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৩৩ রানে ৪ উইকেট নেন আর্চার।

জস বাটলারকে ফেরানোর পর ভুবনেশ্বর কুমার। ছবি: বিসিসিআই

জস বাটলারকে ফেরানোর পর ভুবনেশ্বর কুমার। ছবি: বিসিসিআই

বোলিংয়ে ভারতের শুরুটা
হয় ভুবনেশ্বরের মেডেন ওভার দিয়ে। এই পেসারের
পরের ওভারের প্রথম বলে চার মারেন জেসন রয়, তৃতীয় বল ছক্কায় ওড়ান জস বাটলার। এক বল
পরই তাকে ফিরিয়ে প্রতিশোধ নেন ভুবনেশ্বর। আগের ম্যাচে
ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক এবার থামেন ৯ রানে।

তিনে নামা
মালান ৩ রানে জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। সিরিজে প্রথমবার খেলতে নামা লেগ
স্পিনার রাহুল চাহারকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে শরীরের পেছন দিয়ে বোল্ড হন তিনি (১৭
বলে ১৪)।

দারুণ
খেলতে থাকা রয়ও ফেরেন পরের ওভারেই। ২৭ বলে ৬ চার ও একটি ছক্কায় ৪০ রান করা
ব্যাটসম্যানকে থামান পান্ডিয়া।

ঝড় তোলেন
স্টোকস। ওয়াশিংটন সুন্দরকে ছক্কায় ওড়ান ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে, চাহারের বল আছড়ে
ফেলেন সাইটস্ক্রিনে। শুরুতে রানের জন্য সংগ্রাম করলেও পরে হাত খোলেন জনি
বেয়ারস্টো। সুন্দরের টানা তিন বলে মারেন দুটি চার, একটি ছক্কা। দুজনের জুটির রান
পঞ্চাশ স্পর্শ করে ২৯ বলে। বেয়ারস্টোর (১৯ বলে ২৫) বিদায়ে ভাঙে ৬৬ রানের
জুটি।   

শেষ চার
ওভারে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৪৬ রান। আশা হয়ে টিকে ছিলেন স্টোকস ও মর্গ্যান। তবে
১৭তম ওভারে প্রথম দুই বলে এই দুজনকেই ফিরিয়ে দেন শার্দুল। ২৩ বলে ৪টি চার ও ৩  ছক্কায় ৪৬ রান করেন স্টোকস।

শেষ ওভারে ২৩ রানের সমীকরণে অবশ্য জমে ওঠে লড়াই। শার্দুলের প্রথম বলে আসে ১
রান। পরের দুই বলে চার ও ছক্কা মারেন আর্চার। এরপর শার্দুল দেন দুটি ওয়াইড। ৩ বলে
চাই ১০। চতুর্থ বলে আর্চার নিতে পারেন ১ রান। পরের বলে আউট হয়ে যান জর্ডান। শেষ
বলে ব্যাটই ছোঁয়াতে পারেননি আর্চার। উচ্ছ্বাসে মাতে ভারত।

সংক্ষিপ্ত
স্কোর:

ভারত: ২০ ওভারে ১৮৫/৮ ( রোহিত
১২, রাহুল ১৪, সূর্যকুমার ৫৭, কোহলি ১, পান্ত
৩০, শ্রেয়াস ৩৭, পান্ডিয়া ১১, শার্দুল
১০*, সুন্দর ৪, ভুবনেশ্বর ০*; রশিদ ৪-১-৩৯-১, আর্চার ৪-০-৩৩-৪, উড ৪-১-২৫-১, জর্ডান ৪-০-৪১-০, স্টোকস ৩-০-২৬-১, স্যাম কারান ১-০-১৬-১)

ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৭৭/৮ (রয় ৪০, বাটলার ৯, মালান ১৪, বেয়ারস্টো ২৫, স্টোকস ৪৬, মর্গ্যান ৪,
স্যাম কারান ৩, জর্ডান ১২, আর্চার ১৮*, রশিদ ০*; ভুবনেশ্বর ৪-১-৩০-১, পান্ডিয়া ৪-০-১৬-২, শার্দুল ৪-০-৪২-৩, সুন্দর ৪-০-৫২-০, চাহার ৪-০-৩৫-২)

ফল: ভারত ৮ রানে জয়ী

সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের সিরিজে চার ম্যাচ শেষে ২-২
সমতা

ম্যান
অব দা ম্যাচ:

সূর্যকুমার যাদব।