শুক্রবার বিকালে ঢাকা সফররত শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই প্রত্যাশার কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বললাম, রোহিঙ্গার ব্যাপারে আমরা আশা করি, তারা যেহেতু আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ, তারা অবশ্যই আমাদের সাহায্য করতে পারে।
”আর মিয়ানমার তাদের বন্ধু দেশ… যদিও মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র এবং তারা বলেছে (রোহিঙ্গাদের) নিয়ে যাবে, কিন্তু চার বছর ধরে (একজনও) নেয় নাই। বলেছি যে, আপনারা ওদের সাথে একটু আলাপ করলে ভালো।”
রাজাপাকসের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ার কথা জানিয়ে মোমেন বলেন, “উনি বললেন, ‘নিশ্চয়। দিস ইজ এ সিরিয়াস ইস্যু, এ ব্যাপারে আমরা আপনাদের পাশে আছি’।”
২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য পদে বাংলাদেশকে ভোট দেওয়ার জন্যও শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
তিনি বলেন, “আমি বলেছি, আমরা হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের সদস্য, আগামীতেও হতে চাই। তিনি বলেছেন, অবশ্যই তারা ভোট দেবেন।”
আগে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব চুক্তি হয়েছিল, সেগুলো নিয়েও রাজাপাকসের সঙ্গ কথা হয়েছে মোমেনের।
তিনি বলেন, ”বলেছি, আমাদের অনেকগুলো চুক্তি হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবায়ন হয় নাই। সে ব্যাপারে যদি তিনি একটু উদ্যোগ নেন।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে যেসব আলোচনা হয়েছে তা ‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশে হয়েছে। যা যা বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কা সেগুলো ‘গ্রহণ করেছে’।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনে যোগ দিতে দুই দিনের সফরে শুক্রবার সকালে ঢাকায় আসেন মাহিন্দা রাজাপাকসে।
বিকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে তিনি সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন।
সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক হবে রাজপাকসের। সেই বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, উপকূলীয় জাহাজ চলাচল, শিক্ষা, তথ্য প্রযুক্তির মত ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা গুরুত্ব পাবে।
দুই সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হবে বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।