ক্যাটাগরি

জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করল আফগানিস্তান

আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে শনিবার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে
৪৭ রানে জিতেছে আফগানিস্তান। তিন ম্যাচের সিরিজটি তারা জিতে নিয়েছে ৩-০ ব্যবধানে।

জাদরানের ৩৫ বলে ৭২ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে আফগানিস্তান
৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে তোলে ১৮৩ রান। লক্ষ্য তাড়ায় জিম্বাবুয়ে ৫ উইকেট হারিয়ে তুলতে
পারে মাত্র ১৩৬ রান।

অধিনায়ক হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি
জয়ের রেকর্ড নিজের করে নিলেন আসগর। গত ম্যাচ জিতে মহেন্দ্র সিং ধোনির ৪১ ম্যাচ জয়ের
কীর্তিতে ভাগ বসিয়েছিলেন তিনি।

প্রথম দুই ম্যাচেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে তেমন কোনো লড়াই
করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। বোলিং করে যেমন প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখতে পারেননি অল্পতে, ব্যাটিংও
ছিল সফরকারীদের জন্য হতাশার। ১৯৮ রান তাড়ায় প্রথম ম্যাচে হারে ৪৮ রানে, দ্বিতীয়টিতে
১৯৪ রানের লক্ষ্যে ৪৫ রানে।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির উইকেটেই হয়েছে এই ম্যাচ। এ দিন
একটু মন্থর ছিল উইকেট। তবে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তানের শুরুটা খারাপ হয়নি।
প্রথম ৫ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৭ রান তোলে দলটি।

ষষ্ঠ ওভারে জিম্বাবুয়েকে সাফল্য এনে দেন রিচার্ড এনগারাভা।
কট বিহাইন্ড করেন ২১ বলে ১৮ রান করা রহমানউল্লাহ গুরবাজকে। ভাঙে ৪২ রানের উদ্বোধনী
জুটি।

দেখেশুনে কয়েক ওভার কাটিয়ে দেন করিম জানাত ও উসমান গনি।
পরে জানাত আক্রমণ শুরু করলেও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ১৪ বলে ২১ করে বোল্ড হন ওয়েলিংটন
মাসাকাদজার বলে।

ইনিংস বড় করতে পারেননি গনিও। সিকান্দার রাজাকে স্লগ সুইপে
ছক্কায় ওড়ানোর পরের বলেই একই চেষ্টায় ব্যর্থ হন। ৩১ বলে এক ছক্কা ও ৪ চারে ৩৯ রান করেন
আফগান ওপেনার। মোহাম্মদ নবিকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন এনগারাভা।

১৪ ওভার শেষে আফগানিস্তানের পুঁজি ৯৮ রান, উইকেট তখনও
ছিল ৬টি। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সেখান থেকে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন আসগর ও জাদরান।

ফারাজ আকরামকে চার মেরে পরের বলে লং অফে ধরা পড়েন আসগর।
১২ বলে ২ ছক্কা ও এক চারে করেন ২৪। ওই ওভারেই ছক্কায় ৩০ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন জাদরান।
পরের বলে আবার মারেন বাউন্ডারি।

ইনিংসের শেষ ওভারে প্রথম দুই বলে রশিদ খান ও শারাফুদ্দিন
আশরাফকে ফিরিয়ে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা জাগান ব্লেসিং মুজারাবানি। কিন্তু তার ভালো শুরুর
স্বস্তিকে হতাশায় বদলে দেন জাদরান। শেষ চার বলে ২ চার ও এক ছক্কাসহ ১৬ রান তুলে নেন।

৩৫ বলে ৭২ রানের ইনিংসে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন জাদরান।
পাঁচটি করে চার ও ছক্কা মারেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। আফগানিস্তান শেষ ৬ ওভারে তোলে
৮১ রান।

রান তাড়ায় পঞ্চম বলেই তিনাশে কামুনহুকামউইকে হারায় জিম্বাবুয়ে।
অভিষিক্ত ফজলহক ফারুকির বলে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হন তিনি।

বেশিক্ষণ টিকতে পারেন টারিসাই মুসাকান্দা ও শন উইলিয়ামস।
নবিকে টানা দুই চার মেরে বোল্ড হন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। ভাঙে ৩৭ রানের জুটি।

২৮ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় ৩০ রান করা মুসাকান্দাকে ফিরিয়ে
দেন নাভিন-উল-হক। পরপর দুই বলে মিল্টন শুম্বা ও রিচমন্ড মুতুমবামিকে কট বিহাইন্ড করেন
করিম জানাত।

৫৬ রানে ৫ উইকেট হারানো দলটি এরপর আর কোনো উইকেট হারায়নি।
বার্ল ও রাজার মনোযোগ ছিল পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর দিকে। ২৯ বলে রাজা করেন ৪১। বার্লের
ব্যাট থেকে আসে ৩১ বলে ৩৯, তার তিনটি ছক্কার পাশে এক চার। দুই জনে গড়েন ৮০ অবিচ্ছিন্ন
জুটি।

খুনে ব্যাটিংয়ে জাদরান জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। অলরাউন্ড
আলোয় উজ্জল জানাত জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। তিন ম্যাচে একটি ফিফটিসহ করেন ১০০ রান,
নেন ৫ উইকেট। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৮৩/৭ (গুরবাজ ১৮, গনি ৩৯, জানাত ২১, জাদরান ৭২*, নবি ২, আসগর ২৪, রশিদ
০, শারাফুদ্দিন ০, হাশমতউল্লাহ ০*; মাসাকাদজা ৪-০-৩২-১, এনগারাভা ৪-০-৩৫-২, ফারাজ ৪-০-৪৬-১,
মুজারাবানি ৪-০-৪১-২, রাজা ২-০-১৪-১, বার্ল ২-০-১২-০)।

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৩৬/৫ (কামুনহুকামউই ১, মুসাকান্দা ৩০, উইলিয়ামস ১৪, শুম্বা ৮, রাজা
৪১*, মুতুমবামি ০, বার্ল ৩৯; ফারুকি ৪-০-২৭-১, নবি ৪-০-২৯-১, নাভিন ৩-০-১৭-১, রশিদ
৩-০-১৮-০, জানাত ৪-০-৩৪-২, শারাফুদ্দিন ২-০-১০-০)।

ফল: আফগানিস্তান ৪৭
রানে জয়ী।

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ ৩-০ তে জিতেছে আফগানিস্তান।

ম্যান অব দা ম্যাচ: নাজিবউল্লাহ জাদরান।

ম্যান অব দা সিরিজ: করিম জানাত