ক্যাটাগরি

গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে পি কে হালদারের ‘সহযোগী’ শুভ্রা

সোমবার সকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান।

বিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা মহানগরের ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, “শুভ্রা রানী ঘোষ দেশের বাইরে থেকে বাংলাদেশে আসছে, এমন একটি সংবাদ পেয়ে দুদকের একটি টিম বিমানবন্দরে আগে থেকেই অবস্থান নেয়। তিনি আজ সকালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমানে বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

শুভ্রা রানী ঘোষকে গ্রেপ্তারের পর বেলা পৌনে ৩টার দিকে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

শুভ্রা রানী ঘোষকে জিজ্ঞাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানান দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার। দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর রিমাণ্ডের পক্ষে শুনানি করেন।

জাহাঙ্গীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুভ্রা রানী ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল, শুনানির পর আদালত সন্তুষ্ট হয়ে পাঁচ দিনই মঞ্জুর করেছেন।”

গত রোববার ওয়াকামা ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই ‘কাগুজে কোম্পানির’ পরিচালক শুভ্রা রানী ঘোষ এবং পি কে হালদারসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় ৪০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর মধ্যে এক মামলায় পি কে হালদারের সহযোগিতায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে ৮৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঋণের নামে তুলে আত্মাৎ এবং পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। শুভ্রা রানী ঘোষকে আসামি করা হয়েছে এ মামলতেই।

পি কে হালদারের দুর্নীতি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এর আগে গত ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি আরও চারটি মামলা করে দুদক।

এসব মামলায় ‘ভুয়া ও কাগুজে’ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৫১ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদারসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।

এই চার কোম্পানি হল- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।

এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।

দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, পি কে হালদার তার নিজের, আত্মীয়, বন্ধু ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে আটটি কোম্পানিতে বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যার ‘বৈধ কোনো উৎস’ অনুসন্ধানে মেলেনি।

পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে। তার মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই কোর্ট।