মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী করমর্দন না করে দূরত্ব বজায় রেখে তারা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে লোটে শেরিংকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাকে স্বাগত জানানো হয় ২১ বার তোপধ্বনি দিয়ে।
এরপর ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে শেখ হাসিনা অভ্যর্থনা মঞ্চে পৌঁছালে তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি দল গার্ড অব অনার দেয়।
গার্ড পরিদর্শন শেষে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে লাইন অব প্রেজেন্টেশনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস এবং তিন বাহিনীর প্রধান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেশী দেশের এই সরকারপ্রধানের আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দর এলাকা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। টার্মিনালের উপরে এবং সামনে ছিল বাংলাদেশ ও ভুটানের পতাকার সজ্জা। ভিভিআইপি টার্মিনালের দুই পাশে দুই সরকার প্রধানের ছবিও স্থাপন করা হয়।
বিমানবন্দর থেকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সরাসরি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন, সেখানে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করার পাশপাশি পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন তিনি।
এরপর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মতি যাদুঘর পরিদর্শন করে সেখানে পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বিকেলে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সন্ধ্যায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন লোটে শেরিং। সেখানে তিনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করবেন।
বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক হবে। পরে তাদের নেতৃত্বে হবে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
বিকেলে বঙ্গভবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে লোটে শেরিং জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনে যোগ দেবেন।
তিন দিনের এ সফর শেষে বৃহস্পতিবার সকালে ভুটানের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের দশ দিনব্যাপী আয়োজনের সূচনা হয়েছে গত ১৭ মার্চ, জাতির পিতার জন্মদিনে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীতে তার সমাপ্তি হবে।
প্রতিবেশী পাঁচ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা বাংলাদেশের এ উদযাপানের সঙ্গী হচ্ছেন।
আয়োজনের প্রথম দিন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ, ১৯ মার্চ শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে এবং ২২ মার্চ নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ঢাকায় আসবেন।