ক্যাটাগরি

বঙ্গবন্ধু, জাতীয় ৪ নেতাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম তালিকা প্রকাশ

বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী
আ ক ম মোজাম্মেল হক মুক্তিযোদ্ধাদের এই তালিকা প্রকাশ করেন।

তালিকায় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের পাশাপাশি খন্দকার মোশতাক আহমেদ
ও জিয়াউর রহমানের নামও রয়েছে।

তবে তালিকায় তাদের নামের পাশে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তি ‘অপকর্ম’ সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য লেখা থাকবে বলে জানান মন্ত্রী।

মোজাম্মেল হক বলেন, প্রথম পর্যায়ে একলাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জনের তালিকা প্রকাশ
করেছে সরকার। জুনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পূর্ণ ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব
হবে।

বৃহস্পতিবারই মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বলে
তিনি জানান।

তালিকায় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি, মোশতাক ও জিয়ার নাম থাকা নিয়ে
মন্ত্রী বলেন, “তাদের খেতাব বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু তারা তো
মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। তারা যুদ্ধ করেননি- এটা তো বলতে পারব না। তা হলো তো ইতিহাসের বিকৃতি
হবে।

“যদি বলি জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেনি- এটা তো ঠিক হলো না। সে তো সেক্টর
কমান্ডার ছিলো, যুদ্ধ করেছে। পরবর্তীকালে কী কাজ করেছেন- এটার শাস্তি হতে পারে।”

বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ তাদের ‘অপকর্ম বা চেতনাবিরোধী’ কাজের প্রসঙ্গ টেনে
তিনি বলেন, “সেজন্য মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যেসব সুবিধা তারা পেয়েছেন, যেগুলো বাতিলযোগ্য,
সেগুলো বাতিল করা হয়েছে।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, “খন্দকার মোশতাক মুজিবনগর সরকারে
ছিলেন। তবে এটাও সত্য তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত। পরে তিনি অবৈধভাবে ক্ষমতায়
এসেছিলেন।

“সেই হিসেবে মন্ত্রী হওয়ার পরে ডান দিকে লেখা থাকবে বঙ্গবন্ধুর খুনি
হিসেবে অভিযুক্ত ছিল, তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও হয়েছে। বিচার হয়নি, কারণ তিনি মৃত্যুবরণ
করেছেন।”

তবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাওয়ার তালিকায় একলাখ ৮২ হাজার ৮৩৪ জনের নাম
থাকার তথ্য তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী তিনি বলেন, প্রায় ৩৫ হাজার জনের বেসামরিক
গেজেট জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের অনুমোদন না থাকায় তালিকার বাইরে রয়ে গেছে।

“ইতোমধ্যে এসব গেজেট নিয়মিতকরণের লক্ষে আমরা ৪৩৪ উপজেলার প্রতিবেদন
পেয়েছি। সেগুলো যাচাই-বাছাই এবং আপিল শুনানি শেষে ৩০ জনের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের
নাম চূড়ান্ত তালিকায় প্রকাশ করা হবে।”

মন্ত্রী বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা দেশের প্রখ্যাত গবেষকদেরে
নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রথম ধাপে আমরা ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ
করছি।

“যাচাই-বাছাই শেষে ধাপে ধাপে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে। এই তালিকাও
আগামী ৩০ জুনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ করা হবে।”

এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জনের বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকার মধ্যে বরিশালের
১২ হাজার ৫৬৩ জন, চট্টগ্রামের ৩০ হাজার ৫৩ জন, ঢাকার ৩৭ হাজার ৩৮৭ জন, ময়মনসিংহের ১০
হাজার ৫৮৮ জন, খুলনার ১৭ হাজার ৬৩০ জন, রাজশাহীর ১৩ হাজার ৮৮৯ জন, রংপুরের ১৫ হাজার
১৫৮ জন এবং সিলেট বিভাগের ১০ হাজার ২৬৪ জন রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ
ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক মো. জহুরুল ইসলাম রোহেলসহ একাধিক ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।