বৃহস্পতিবার মারধরে
আহত হয়েছেন প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আসিফ হাওলাদার ও বাংলা ট্রিবিউনের
প্রতিনিধি আবিদ হাসান রাসেল।
আসিফ হাওলাদারের মাথা
ফেটেছে; আঘাতের গাল ফুলে গেছে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক
চিকিৎসা নিয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আর আবিদ হাসান ঢাকা
মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি আছেন।
এছাড়া মশাল মিছিলে
ছাত্রলীগের হামলায় ১৬ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন দাবি বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, “ছাত্রলীগ আজ ঢাকা শহরে বিভিন্ন
জায়গা থেকে সন্ত্রাসীদের ঢাবি ক্যাম্পাসে এনে আমাদের উপর বর্বর হামলা চালিয়েছে। আমাদের
১৬ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারা ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে
মারধর করা হয়েছে।”

হামলার বিষয়ে আসিফ
হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সন্ধ্যায় বাম ছাত্র সংগঠনগুলো টিএসসি থেকে
মশাল মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বরের দিকে যায়।তখন ছাত্রলীগেরও কয়েকশ নেতাকর্মী তাদের পেছনে
একটি মিছিল নিয়ে যায়।
সেখানে বাম ছাত্রদের
মিছিলে ছাত্রলীগ ধাওয়া করলে তারা ফুলার রোডে আবাসিক এলাকার ভেতরে অবস্থান নেয়।
“আমাকে গেইটে সামনে
দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে আমার পরিচয় জানতে চায়। আমি
প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক পরিচয় দেওয়ার পর তারা আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর
শুরু করে। আমার প্রেস আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয়। আমার ব্যাগে তিন হাজার টাকা ছিল, সেই
ব্যাগটাও নিয়ে যায়।
“মারধরের একপর্যায়ে
আমার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। তারপরও তারা আমাকে মারতে থাকে।
পরে ছাত্রলীগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন ভাই এসে আমাকে উদ্ধার
করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন।”
এদিকে টিএসসির সামনে
হামলার বিষয়ে আবিদ হাসান রাসেল বলেন, “বিকাল ৫টার দিকে বাংলাদেশের জনগণ ব্যানারে একদল
লোক টিএসসির সামনে খাবার বিতরণ করছিল। সেখানে হামলা হলে মোবাইলে ছবি তোলার চেষ্টা করলে
ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে আমার মোবাইল নিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাকে পেটানো শুরু করে। দৌড়
দেওয়ার চেষ্টা করলে ৬-৭ জন এসে আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। পরে টিএসসির ভেতরে ঢুকেও
আমাকে মেরেছে।”
হামলার বিষয়ে ছাত্রলীগের
সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত
ঘটনা। কারা হামলা করেছে আমরা জানতে পারিনি। ছাত্রলীগের কেউ অতি উৎসাহী হয়ে হামলা করে
থাকলে আমরা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের
সহাকারী প্রক্টর আব্দুর রহিম বলেন, “প্রক্টরসহ আমরা বেশ কয়েকজন কোভিডে আক্রান্ত হয়ে
বাসায় কোয়ারেন্টাইনে আছি। তারপরও প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে আমরা বাসা থেকে ক্যাম্পাসের
সার্বিক খোঁজ খবর রাখছি। আজকে এমন একটি রাতে এধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা খুবই দুঃখজনক।
“বিশ্ববিদ্যালয়ের কতগুলো
নির্ধারিত জায়গা আন্দোলন-সংগ্রাম হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা শুনেছি, আজকে কে বা কারা বিশ্ববিদ্যালয়েরর
আবাসিক এলাকায়ও ঢুকে পড়েছে। সেখানে বহিরাগত লোকজনও ছিল। ফুলার রোডে, ঈশাখাঁ রোডের আবাসিক
এলাকায়ও তারা ঢুকে পড়েছে। এখানকার লোকজন আতঙ্কিত হয়ে অনেকে আমাকে ফোন করেছে। সেখানে
এধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হয়েছে। এটা মোটেও কাম্য
নয়। আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি।”