ওই সড়কে যানবাহন চলাচল
বন্ধ থাকায় চট্টগ্রামের সঙ্গে খাগড়াছড়ি, ফটিকছড়ি ও নাজিরহাট এলাকার লোকজন কার্যত অবরুদ্ধ
অবস্থায় রয়েছে।
উপজেলা সদরে হাটহাজারী
দারুল উলুম ময়নুল ইসলামের (বড় মাদ্রাসা) সামনের রাস্তায় হাজারের মতো হেফাজত কর্মী অবস্থান
নিয়ে আছে বলে জানা গেছে। অবরোধকারীদের বড় অংশই ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সাংবাদিকদের
থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, সড়কের ওপর ইটের দেয়াল তুলে, লোহার গ্রিল এবং টিন দিয়ে
হেফাজতকর্মীরা রাস্তা অঅটকে রেখেছে। প্রশাসনের পক্ষ অনুরোধ করা হলেও শনিবার সন্ধ্যা
সাড়ে সাতটা পর্যন্ত তারা অবস্থান ছাড়েনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজের পর কয়েক হাজার মাদ্রাসা
শিক্ষার্থী ওই সড়কে নেমে বিক্ষোভ করে এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। একপর্যায়ে তারা
হাটহাজারী থানা, উপজেলা ভূমি অফিস এবং উপজেলা ডাক বাংলোয় ভাংচুর চালায়। ভূমি অফিসে
অগ্নিসংযোগও করে হেফাজতের কর্মীরা। সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত চারজন চট্টগ্রাম
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা রুহুল আমীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অবরোধ এখনও আছে। তারা সড়কের মাঝখানে ইটের দেয়াল দিয়েছে বলে
জেনেছি।”
প্রশাসনের পক্ষ থেকে
মাদ্রাসা শিক্ষর্থীদের সরে যেতে অনুরোধ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে নিহত চার কর্মীর
লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয়
সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
ফাইল ছবি
তিনি জানান, মারা যাওয়া
চারজনের বাড়ি মাদারিপুর, নওগাঁ, কুমিল্লা ও রাউজানে। তাদের পরিবারের সদস্যরা পুলিশের
কাছ থেকে লাশ নেবেন।
এদিকে শনিবার দুপুরে
নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে হেফাজতে ইসলামের প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। পরে ওই এলাকায়
মিছিল করে তারা।
এদিকে হাটহাজারীতে
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে হেফাজত নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে প্রশাসন।
২৪ ঘণ্টারও বেশি সময়
ধরে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে হেফাজতের কেন্দ্রীয়
নেতা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, “আমাদের কর্মীরা শুক্রবার দুপুরে মোদীবিরোধী শান্তিপূর্ণ
বিক্ষোভ করেছিল। মোদী আসলে কি আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাতে পারব না?
থানায় ঢিল মারলে কি
গুলি করে মানুষ হত্যা করতে হবে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “আমাদের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ
সড়ক অবরোধ করছে মাত্র।”
চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
হামলার প্রতিবাদে রোববার সারাদেশে হরতালের ডাক দিয়েছে হেফাজত ইসলাম। সংগঠনের কর্মীরা
রোববার শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করবে বলে জানান আজিজুল হক ইসলামাবাদী।