ক্যাটাগরি

লড়াই জমাতেই পারল না বাংলাদেশ

বাংলাদেশের বড় হার

ধুঁকতে ধুঁকতে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ১৪৪ রান পর্যন্ত যেতে পারল বাংলাদেশ। ৬৬ রানের জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এগিয়ে গেল নিউ জিল্যান্ড।

বড় রান তাড়ায় বাংলাদেশ পথ হারায় পাওয়ার প্লেতেই। পরের দিকের ব্যাটসম্যানরাও পারেননি দারুণ কিছু করতে।

ম্যাচ থেকে বোলিংয়ে বাংলাদেশের একমাত্র ইতিবাচক দিক অভিষিক্ত নাসুম আহমেদের পারফরম্যান্স। ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পেরেছেন কেবল আফিফ হোসেন (৩৩ বলে ৪৫)। সাইফ অপরাজিত থাকেন ৩৪ বলে ৩৪ করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ২১০/৩ (গাপটিল ৩৫, অ্যালেন ০, কনওয়ে ৯২, ইয়াং ৫৩, ফিলিপস ২৪*; নাসুম ৪-০-৩০-২, সাইফ ৪-০-৪৩-০, শরিফুল ৪-০-৫০-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৪৮-০, মেহেদি ৪-০-৩৭-১)।

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪৪/৮ (নাঈম ২৭, লিটন ৪, সৌম্য ৫, মিঠুন ৪, মাহমুদউল্লাহ ১১, আফিফ ৪৫, মেহেদি ০, সাইফ ৩৪*, শরিফুল ৫, নাসুম ০*; সাউদি ৪-০-৩৪-১, বেনেট ৪-০-২০-১, ফার্গুসন ৪-০-২৫-২, সোধি ৪-০-২৮-৪, চাপম্যান ১-০-৯-০, ফিলিপস ১-০-৫-০, মিচেল ২-০-২১-০)।

গাপটিলের অসাধারণ ক্যাচ

ম্যাচে উত্তেজনার লেশমাত্র নেই। তবে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে রোমাঞ্চ ছড়ালেন মার্টিন গাপটিল।

হামিশ বেনেটের বলে জায়গা বানিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন শরিফুল ইসলাম। পয়েন্ট থেকে পেছন দিকে দৌঁড়ে ফুল লেংথ ডাইভ দিয়ে বল মুঠোবন্দি করেন গাপটিল। ৭ বলে ৫ রান করে শেষ হলো শরিফুলের অভিষেক ইনিংস।

বাংলাদেশ ১৮.১ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৩।

ফিফটি হলো না আফিফের

ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে দারুণ খেলছিলেন আফিফ হোসেন। কিন্তু কাছেও গিয়েও ফিফটি পেলেন না তরুণ এই অলরাউন্ডার।

বল হাতে নিজের শেষ ওভারে ফেরা লকি ফার্গুসনকে দারুণ এক লফটেড অফ ড্রাইভে চার মারেন আফিফ। পরের বলে ফার্গুসন চেষ্টা করেন গতিময় ইয়র্কার করার। ইয়র্ক ঠিক হয়নি, হয়ে যায় লো ফুল টস। আফিফ জায়গা বানিয়ে গ্লাইড করার চেষ্টা করলেও ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। বল ছোবল দেয় স্টাম্পে।

৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ বলে ৪৫ করে আউট হলেন আফিফ। বাংলাদেশ ১৬.৪ ওভারে ৭ উইকেটে ১২২।

সাইফের সঙ্গে আফিফের সপ্তম উইকেট জুটির রান ৬৩। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সপ্তম উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি এটি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আফিফ ও মোসাদ্দেকের ৮২ রান সপ্তম জুটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড।

জুটির ফিফটি

বিধ্বস্ত ইনিংসে খানিকটা লড়াই করছেন আফিফ হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ৭ম উইকেটে দুজনের জুটি স্পর্শ করেছে পঞ্চাশ।

৩৭ বলে এসেছে জুটির ফিফটি। তাতে ৩৩ রানই আফিফের, ২১ বল খেলে।

সোধির ক্যারিয়ার সেরা

প্রথম দুই ওভারে চার উইকেট নিলেও পরের দুই ওভারে আর উইকেটের দেখা পাননি ইশ সোধি। তবে নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং স্পর্শ করেছেন এই লেগ স্পিনার।

৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে সোধির শিকার ৪ উইকেট। গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চেও নিয়েছিলেন তিনি ২৮ রানে ৪ উইকেট।

কিউইদের ব্যর্থ রিভিউ

অনিয়মিত অফ স্পিনার গ্লেন ফিলিপসের বলে রিভিউ নিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড। জোরের ওপর করা বল লাগে সাইফ উদ্দিনের প্যাডে। কিন্তু বল চলে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে। সাইফের রান তখন ৮ বলে ৩।

বেঁচে গেলেন আফিফ

বিপর্যস্ত বাংলাদেশ খানিকটা হলেও স্বস্তি পেল আফিফ হোসেন শুরুতেই জীবন পাওয়ায়। ক্যাচ ছাড়লেন মার্টিন গাপটিল।

আফিফের সেটি তৃতীয় বল। লকি ফার্গুসনের ফুল টসে ব্যাট চালান তিনি সজোরে। তবে বল রাখতে পারেননি নিচে। তীব্র গতিতে ছোটা বল পয়েন্টে নিচু হয়ে হাতে জমানোর চেষ্টা করলেও পারেননি গাপটিল। আফিফ রক্ষা পেলেন পাঁচ রানে।

সোধির চতুর্থ

টানা দুই ওভারে সোধির শিকার দুটি করে উইকেট। মাহমুদউল্লাহকে ফেরানের পরের বলেই আউট মেহেদি হাসান।

প্রথম বলেই মেহেদিকে গুগলি করেন সোধি। মেহেদি আলতো হাতে ডিফেন্স করলেও বিপদ মুক্ত হতে পারেননি। বল পিচে ড্রপ করে পেছনে গিয়ে লাগে স্টাম্পে।

মেহেদি ‘গোল্ডেন ডাক’, বাংলাদেশ ৭.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ৫৯।

সোধির বোলিং বিশ্লেষণ ২-০-৮-৪।

সোধির আরেকটি

ইশ সোধির লেগ স্পিনে যেন চোখে অন্ধকার দেখছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। এবার তার শিকার বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

উইকেটে যাওয়ার পর থেকে বেশ ইতিবাচক মনে হচ্ছিল মাহমুদউল্লাহকে। বল প্রতি রান তোলার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সোধির অফ স্টাস্পের বাইরের বল কাট করতে গিয়ে গড়বড়। ব্যাটের কানায় লেগে বল লাগে স্টাম্পে। হতাশায় কিছুক্ষণ উইকেট দাঁড়িয়ে থাকেন মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশ অধিনায়কের সংগ্রহ ৯ বলে ১১। দলের রান ৭.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ৫৯।

সোধির জোড়া শিকার

তিন বলের মধ্যে ইশ সোধির শিকার দুটি। সৌম্যকে ফেরানোর পর এবার আউট করলেন মোহাম্মদ মিঠুনকে।

সোধির গুগলি না বুঝেই তেঁড়েফুড়ে স্লগ করার চেষ্টা করেন মিঠুন। বলের ধারেকাছে ছিল না ব্যাট, উড়ে যায় বেলস।

৬ বলে ৪ রান করে বোল্ড মিঠুন। ৬ ওভারে বাংলাদেশ ৪ ওভারে ৪৪।

ব্যর্থ সৌম্য

পাওয়ার প্লের ভেতর আক্রমণে এসে নিজের প্রথম ওভারেই সাফল্য পেলেন ইশ সোধি। দারুণ ফিরতি ক্যাচ নিয়ে তিনি ফেরালেন সৌম্য সরকারকে।

ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ মিঠুনের সিঙ্গেলের পর দুই বলে রান নিতে পারেননি সৌম্য। চতুর্থ বলটি ছিল স্লাইডার। সৌম্য বুঝতে না পেরে পুশ করেন। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে বল জমান সোধি।

সৌম্য আউট ৬ বলে ৫ রান করে। ৪.৪ ওভারে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ৪৪।

আশা জাগিয়ে নাঈমের বিদায়

প্রথম বল থেকেই দারুণ খেলছিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। কিন্তু রোমাঞ্চের পিছু নিয়েই শেষ পর্যন্ত ডেকে আনলেন বিপদ। বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনারকে ফিরিয়ে চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে প্রথম উইকেট নিলেন লকি ফার্গুসন।

পঞ্চম ওভারে আক্রমণে আসা ফার্গুসনের প্রথম বল মিড অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দারুণ শটে চার মারেন নাঈম। পরের বলে বোলার বল ছাড়ার বেশ আগেই তিনি শাফল করে চলে যান অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। তা দেখে ফার্গুসন ১৪৭ কিলোমিটার গতির ফুল লেংথ গোলা ছাড়েন স্টাম্প সোজা। নাঈম ফ্লিক করতে চেয়ে পারেননি ব্যাটে-বলে করতে। এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত দিতে সময় নেননি আম্পায়ার।

৫ চারে ১৮ বলে ২৮ রান করে আউট হলেন নাঈম। ২১১ রান তাড়ায় ৪.২ ওভারে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৩৯।

শুরুতে শেষ লিটন

এক প্রান্তে মোহাম্মদ নাঈম শেখ শুরুটা ভালো করলেও আরেক প্রান্তে তাল মেলাতে পারলেন না লিটন দাস। আউট হয়ে গেলেন তিনি কেবল ৪ রান করেই।

টিম সাউদির বলে নাঈমের বাউন্ডারিতে শুরু হয় বাংলাদেশের ইনিংস। তৃতীয় বলে ফুল টস পেয়ে আরেকটি চার মারেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরের ওভারের প্রথম বলে পুল করে বাউন্ডারি মারেন হামিশ বেনেটের বলে।

লিটন প্রথম রানের দেখা পান তৃতীয় ওভারে সাউদিকে চার মেরে। পরের বলেই আউট। লেংথ বল পুল করতে গিয়েও শেষ মুহূর্তে থমকে যান লিটন। বুঝতে পারেন হয়তো, বলটি স্লোয়ার। তবে ব্যাট সংযত করতে পারেননি। হয়ে যায় ফ্লিকের মতো, বল উঠে যায় আকাশে। মিড অনে ক্যাচ নেন ইশ সোধি।

৫ বলে ৪ রান করে আউট লিটন। বাংলাদেশ ২.৩ ওভারে ১ উইকেটে ২০।

দুইশ ছাড়িয়ে নিউ জিল্যান্ড

শুরুতে নাসুম আহমেদের বাঁহাতি স্পিন দিয়ে নিউ জিল্যান্ডকে চমকে দিতে পারলেও পরে আর ভালো করতে পারল না বাংলাদেশ। কনওয়ে-ইয়াংদের সৌজন্যে নিউ জিল্যান্ড শেষ পর্যন্ত গড়ল বড় স্কোর।

২০ ওভার শেষে কিউইদের রান ৩ উইকেটে ২১০।

নিউ জিল্যান্ডে এর আগে চারটি টি-টোয়েন্টি খেলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ১৬৭। দেড়শ ছাড়াতেই পেরেছে তারা স্রেফ ওই একবার।

৫২ বলে ৯২ রান করে অপরাজিত কনওয়ে। ১২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এই নিয়ে দুইবার নব্বই পেরোলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। গত মাসেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ছিলেন ৯৯ রানে।

ইয়াং ফেরেন ৩০ বলে ৫৩ রান করে। ফিলিপস অপরাজিত থেকে যান ১০ বলে ২৪ রান করে।

ফিলিপস ১৪ রানে একটি সুযোগ দিয়েছিলেন ১৯তম ওভারে। লং অফে সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে তার ক্যাচ নিতে পারেননি সৌম্য সরকার।

১০ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের রান ছিল ৮৮। পরের ১০ ওভারে আসে ১২২। শেষ ৫ ওভারে এসেছে ৭৭। মুস্তাফিজের করা শেষ ওভার থেকে এসেছে ২০।

কনওয়ে-ফিলিপসের শেষের ঝড়

ডেভন কনওয়ে ও গ্লেন ফিলিপসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে নিউ জিল্যান্ড ছাড়িয়ে গেল দুইশ। কেবল ২০ বলেই দুজন গড়েন ৫২ রানের জুটি। নিউ জিল্যান্ড তাতে শেষটা করে দুর্দান্ত।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ২১০/৩ (গাপটিল ৩৫, অ্যালেন ০, কনওয়ে ৯২, ইয়াং ৫৩, ফিলিপস ২৪*; নাসুম ৪-০-৩০-২, সাইফ ৪-০-৪৩-০, শরিফুল ৪-০-৫০-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৪৮-০, মেহেদি ৪-০-৩৭-১)।

অবশেষে থামলেন ইয়াং

অভিষেকে দারুণ ব্যাট করা উইল ইয়াংয়ের ঝড় থামালেন মেহেদি হাসান। স্লগ করে ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়লেন তিনি মিড উইকেট সীমানায়।

৩০ বলে ৫৩ রান করে আউট হলেন ইয়াং। ভেঙে গেল ১০৫ রানের জুটি।

১৬.৫ ওভারে নিউ জিল্যান্ড ৫ উইকেটে ১৫৮।

জুটির একশ

তৃতীয় উইকেটে কনওয়ে ও ইয়াং জুটির শতরান এলো ৫৮ বলেই।

অভিষেকে ইয়াংয়ের ফিফটি

প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেই নিজের জাত চেনালেন উইল ইয়াং। চার নম্বরে নেমে ফিফটি স্পর্শ করলেন ২৮ বলে।

এর আগে দুটি করে ওয়ানডে ও টেস্ট খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার প্রথম পঞ্চাশ এটি।

ইনিংসে চার দুটি, ছক্কা দ্বিগুন। চার ছক্কার দুটি মুস্তাফিজের বলে, শরিফুল ও সাইফ উদ্দিনের বলে একটি করে।

নিউ জিল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেকে ফিফটি করা পঞ্চম ব্যাটসম্যান তিনি।

কনওয়ের ফিফটি

টি-টোয়েন্টিতে ডেভন কনওয়ের স্বপ্নের মতো পথচলা চলছেই। দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে নিউ জিল্যান্ডে চলে আসা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান স্বাদ পেলেন আরেকটি ফিফটির।

নাসুম আহমেদের বলে ছক্কায় ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি ৩৭ বলে।

ফিফটি ছোঁয়া শটে অবশ্য নাটক হলো বেশ। একদম সীমানা ঘেঁষে ক্যাচ নেন শরিফুল ইসলাম। বল হাতে জমিয়ে পেছনে ফিরে তাকিয়ে নিশ্চিত হয়ে তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিত করেন ‘আউট।’ সিদ্ধান্ত যায় তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। মাঠের আম্পায়ারের সফট সিগনালও ছিল আউট।

কিন্তু কয়েকবার রিপ্লে দেখে তৃতীয় আম্পায়ার রায় দেন, ফিল্ডারের পা ও সীমানা দড়ির মধ্যে কোনো ফাঁক তার চোখে পড়ছে না। সম্ভাব্য ক্যাচ তাই হয়ে যায় ছক্কা।

৬ চার ও ১ ছক্কায় হয়ে যায় কনওয়ের ফিফটি।

দ্বাদশ টি-টোয়েন্টিত তার চতুর্থ ফিফটি।

আরেক জুটির পঞ্চাশ

টানা দুটি জুটিতে ফিফটি পেল নিউ জিল্যান্ড। গাপটিলের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রানের জুটির পর তৃতীয় উইকেটে উইল ইয়াংয়ের সঙ্গে ডেভন কনওয়ের জুটি পেরিয়ে গেল পঞ্চাশ।

৩২ বলে এসেছে এই জুটির পঞ্চাশ। তাতে দুজন এগিয়েছেন সমান তালেই। ২৭ এসেছে কনওয়ের ব্যাট থেকে, ইয়াংয়ের ব্যাট থেকে ২৪।

নিউ জিল্যান্ডের একশ

থিতু হওয়া মার্টিন গাপটিলকে হারালেও নিউ জিল্যান্ড ছুটছে দারুণ গতিতেই। ১১.৪ ওভারে দলের রান স্পর্শ করেছে ১০০।

উইকেটে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের বলে লং অফ দিয়ে ছক্কা মারেন অভিষিক্ত উইল ইয়াং। পরে লং অন দিয়ে ছক্কায় ওড়ান আরেক বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজকে।

১২ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ১০২। ২৯ বলে ৪০ রান নিয়ে খেলছেন কনওয়ে, ১৫ বলে ২২ রান নিয়ে ইয়াং।

নাসুমের আরেকটি

নাসুম-গাপটিলের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয় হলো নাসুমের। অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে দেখা পেলেন আরও একটি উইকেটের।

ম্যাচের প্রথম ওভারে গাপটিলকে আটকে রাখেন নাসুম। তার পরের ওভারে গাপটিল মারেন ছক্কা-চার। পাওয়ার প্লে শেষে আবার বোলিংয়ে এসে গাপটিলকে বিদায় করে দিলেন নাসুম।

গাপটিলকে ক্রিজ ছেড়ে বেরোতে দেখেই তার নাগালের একটু বাইরে বল করেন নাসুম। অনেকটা ঝুলিয়েও দেন, মন্থর গতিতে। তাতেই গাপটিলের টাইমিংয়ে গড়বড়। গায়ের জোরে মারতে গিয়ে গাপটিল ধরা পড়েন লং অফ সীমানায় সৌম্য সরকারের হাতে।

নিজের শততম টি-টোয়েন্টিতে গাপটিলের রান ২৭ বলে ৩৫। নিউ জিল্যান্ড ৬.৫ ওভারে ২ উইকেটে ৫৩।

পাওয়ার প্লেতে পঞ্চাশের কাছে

শুরুর ধাক্কা দ্রুতই সামলে নিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। প্রথম ওভারে দারুণ বোলিং করা নাসুমের পরের ওভারের প্রথম বলেই দারুণ এক ছক্কা মারেন গাপটিল। ওই ওভারে মারেন আরেকটি চার। শরিফুলের প্রথম ওভার থেকে আসে ১৩ রান।

রানের গতি কমাতে পরে অভিজ্ঞ মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্রথম ৬ ওভারের মধ্যে ব্যবহার করা হয় ৪ বোলার।

ষষ্ঠ ওভারে মোহাম্মদ নাঈম শেখ সরাসরি থ্রোয়ে স্টাম্পে লাগান। তবে অল্পের জন্য রান আউট হননি কনওয়ে। ওই ওভারেই সাইফ উদ্দিনকে হুক করে ছক্কায় ওড়ান গাপটিল।

৬ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ১ উইকেটে ৪৮। গাপটিল খেলছেন ২৪ বলে ৩৩ রান নিয়ে, কনওয়ে ১১ বলে ১১।

শুরুটা ভালো হলো না শরিফুলের

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ওভারটি নাসুমের মতো দারুণ কিছু হলো না শরিফুল ইসলামের। ১৯ বছর বয়সী এই পেসারকে প্রথম বলেই চার মেরে স্বাগত জানান গাপটিল।

পরে ডেভন কনওয়েকে একবার বাড়তি বাউন্সে পরাস্ত করতে পারলেও দুটি চারও মারেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

শরিফুলের প্রথম ওভার থেকে আসে ১৩ রান।

নাসুমের স্বপ্নের শুরু

নিউ জিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে ঝড় তোলা ফিন অ্যালেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শুরুতেই পেলেন উল্টো স্বাদ। অভিষেক ম্যাচে প্রথম বলেই আউট তিনি। তাকে বোল্ড করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুটা দুর্দান্ত হলো বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের।

নাসুমকে দিয়েই বোলিং শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম চার বলে মার্টিন গাপটিল কোনো রান নিতে পারেননি। পঞ্চম বলে নেন দ্রুত একটি রান। ওভারের শেষ বলে আউট অ্যালেন।

প্রথম থেকেই স্টাম্প সোজা বল করছিলেন নাসুম। এই বলটিও ছিল একই। বল পিচ করে স্কিড করে ডানহাতি অ্যালেনের জন্য আরেকটু ভেতরে ঢোকে অ্যাঙ্গেলে। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড।

প্রথম ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ড ১ উইকেটে ১।

ত্রয়ী ছাড়া প্রথমবার বাংলাদেশ

বাংলাদেশ দলের মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম জানান, প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে মুশফিকুর রহিমকে। বাংলাদেশ দলে আগে থেকেই নেই সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল।

বাংলাদেশের এটি ৯৭তম টি-টোয়েন্টি। ২০০৬ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পা রাখার পর এই প্রথম এই তিন জনকে ছাড়া কোনো টি-টোয়েন্টি খেলছে দল।

নিউ জিল্যান্ডেও দুজনের অভিষেক

নিউ জিল্যান্ড একাদশেও অভিষিক্ত ক্রিকেটার আছেন দুজন। প্রথমবার আন্তর্জাতিক ম্যাচের স্বাদ পাচ্ছেন ফিন অ্যালেন। টেস্ট ও ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও অভিষেক হচ্ছে আরেক ব্যাটসম্যান উইল ইয়াংয়ের।

নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেটের সাম্প্রতিকতম সেনসেশন অ্যালেন। সম্প্রতি ঘরোয়া সুপার স্ম্যাশ টি-টোয়েন্টিতে ১১ ম্যাচে ১৯৩.৩৩ স্ট্রাইক রেট ও ৫৬.৮৮ গড়ে ৫১২ রান করেন এই ২১ বছর বয়সী বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান।

চোট কাটিয়ে স্কোয়াডে ফেরা ফাস্ট বোলার ফার্গুসন একাদশেও ঢুকে গেছেন। জায়গা পাননি আরেক গতি তারকা অ্যাডাম মিল্ন।

নিউ জিল্যান্ড একাদশ: মার্টিন গাপটিল, ফিন অ্যালেন, ডেভন কনওয়ে, উইল ইয়াং, গ্লেন ফিলিপস, মার্ক চাপম্যান, ড্যারিল মিচেল, টিম সাউদি (অধিনায়ক), ইশ সোধি, হামিশ বেনেট, লকি ফার্গুসন।

বাংলাদেশের দুই অভিষেক

বাংলাদেশের একাদশে জায়গা পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ও বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। দুজনেরই আন্তর্জাতিক অভিষেক হচ্ছে এই ম্যাচ দিয়ে। দুজনেরই বেশ কিছু দিন ধরে দলের সঙ্গে থাকার পর প্রথম ম্যাচ খেলার সুযোগ হচ্ছে।

বাংলাদেশ দলের জন্য অবশ্য দুই অভিষিক্তের চেয়েও বড় ঘটনা, একাদশে নেই মুশফিকুর রহিম।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), মোহাম্মদ মিঠুন, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলাম।

উইকেট

সেডন পার্কের উইকেটে ঘাসের ছোঁয়া তেমন একটা নেই। বরাবরই বড় রানের উইকেট বলে পরিচিত এটি। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বললেন, উইকেট তার কাছে খানিকটা শুষ্ক বলে মনে হচ্ছে।

বোলিংয়ে বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক টিম সাউদি। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ জানালেন, টস জিতলে তিনি বোলিংই নিতেন।

ছোট সংস্করণে বড় আশা

ওয়ানডে সিরিজে নিউ জিল্যান্ডের কাছে স্রেফ উড়ে গেলেও অনেক আশা নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করছে বাংলাদেশ। সেই আশার মূল ভিত্তি, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধরন। সিরিজ শুরুর আগের দিন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বলেন, “টি-টোয়েন্টি এমন একটি সংস্করণ, যেখানে ছোট-বড় দল বলে কিছু নেই। র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল হোক বা নয়-দশ নম্বর, নিজেদের দিনে যদি পারফর্ম করে, দু-একজন ক্রিকেটার যদি অসাধারণ খেলে, ব্যটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে আমরা যদি প্রয়োগ করতে পারি, বাস্তবায়ন যদি ভালোভাবে হয়, আমরা যে কোনো দলকে হারাতে পারি, এটা আমাদের বিশ্বাস।”

বিশ্রাম পেয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের নিউ জিল্যান্ড দলে নেই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন, টিম সাইফার্ট, মিচেল স্যান্টনার, জিমি নিশাম, কাইল জেমিসন ও ট্রেন্ট বোল্ট। চোটের কারণে আগে থেকেই নেই কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। তার পরও তারা দারুণ শক্তিশালি ও অলরাউন্ড দল।

বাংলাদেশ পাচ্ছে না অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম পেসার হাসান মাহমুদও। পিঠের চোটে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন তরুণ এই পেসার।