সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতীয় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানটি দুইটি পর্বে বিভক্ত ছিল।
স্থানীয় সময় শুক্রবার প্রথম পর্বে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুবুজ্জামান দূতাবাসের সকল সদস্যদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তারপর দূতাবাসের সদস্যদের উপস্থিতিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ ও আত্মত্যাগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতাসহ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এরপর মান্যবর রাষ্ট্রদূত সকলকে নিয়ে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নার ও লাইব্রেরিতে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পাঠানো বার্তা পাঠ করা হয়। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনগন শোষণ, শাসন এবং আধিপত্যবাদের বিপরীতে জেগে ওঠেন এবং সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।”
রাষ্ট্রদূত স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ এবং আত্মত্যাগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
বিকালে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বেইজিং-এ অবস্থিত মেরিয়ট নর্থইস্ট হোটেলে একটি জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনার আয়োজন করা হয়। যেখানে চীনের ১৩তম জাতীয় পিপলস কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান (উপ-প্রধানমন্ত্রী সমমর্যাদা) উ ওয়াইহোয়া প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। প্রধান অতিথির সফরসঙ্গী ছিলেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী জনাব লু ঝাও হুই এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।
সুবর্ণ জয়ন্তীর এই অনুষ্ঠানে চীনা সরকার বাংলাদেশকে সম্মান দেখিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রধান অতিথি নির্ধারণ করেছে। অভ্যর্থনার আনুষ্ঠানিক পর্বে বাংলাদেশ ও চীনের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। তারপর চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বক্তব্য দেন এবং বক্তব্যটি চীনা ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
প্রধান অতিথি চীনা ভাষায় বক্তব্য দেন এবং তা ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়। এরপর দুই দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব কামনা করে রাষ্ট্রদূত এবং প্রধান অতিথি শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
তারপর বাংলাদেশি শিল্পীদের সমন্বয়ে একটি নৃত্য পরিবেশনা করা হয়। “পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে-রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল” গানটির সাথে নৃত্য পরিবেশন করেন দূতাবাস পরিবারের সদস্য নিহন আনান রহমান, রোকাইয়া তাহিরা এবং নামিরা করিম চৌধুরী।
এরপর রাষ্ট্রদূত, প্রধান অতিথি এবং অন্যান্য রাষ্ট্রদূতেরা ৫০তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রস্তুতকৃত একটি কেক কাটায় অংশ নেন।
রাষ্ট্রদূত মাহবুবুজ্জামান তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বের এবং অবদানের কথা স্মরণ করেন।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশের সাথে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়টি উল্লেখ করেন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠান সমূহের প্রথম দিন ১৭ মার্চে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিং পিং কর্তৃক প্রেরিত ভিডিও বার্তার বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে দূতাবাস চীনে কর্মরত কূটনীতিক, উচ্চ পর্যায়ের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং বেইজিং শহরের উচ্চ প্রতিষ্ঠিত অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সুবর্ণ জয়ন্তীর অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |