যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকার কথা থাকলেও সোমবার ঢাকা থেকে যাত্রীবাহী বাস এসেছে। স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছে ইজি বাইক ও রিকশা।
আইনশঙ্খলা বাহিনী সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছে; তাতে না হলে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করা হবে বলে জেলার পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান জানিয়েছেন।
সরেজমিনে পাবনার বাস টার্মিনাল, বড় বাজার, লাইব্রেরি বাজার ও আব্দুল হামিদ রোড ঘুরে দেখা যায়, নিত্য পণ্যের দোকান ছাড়াও অধিকাংশ দোকানই অর্ধেক খোলা। রাস্তা ও ফুটপাতে জটলা করে হকারের দোকানে চলছে কেনাবেচা। বাজারেও শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না।
আব্দুল আলীম নামের একজন ইজিবাইক চালক বলেন, “করোনাভাইরাসের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে পেটের ভাত জোগাবে কে? গতবার তাও কোনরকম চাল, ডাল পেয়েছিলাম। এবার তাও দেওয়া হবে না শুনেছি। তাই রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় নেই।”
ব্যবসায়ী সমিতির নেতা হাফিজ উদ্দিন বাহার বলেন, “লকডাউন চাই না। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের যে কর্মচারী আছে তাদের দায় আর কতদিন তারা বহন করবে। কাজেই সরকার লকডাউন দিলে এই সমস্ত কর্মচারীদের বেতন সরকারকেই দিতে হবে।”
তিনি এফবিসিসিআই সভাপতিকে বিষয়টা দেখার অনুরোধ জানান।
এদিকে, জনসাধারণকে সচেতন করতে লকডাউন মানার অনুরোধ নিয়ে সোমবার শহরে বিভিন্ন পয়েন্টে ব্রিফিং করেন জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ ও পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান।
এ সময় জনগণকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানান তারা।
জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, “জনগণ করোনাভাইরাস পরিস্থিতির বিষয়টি গুরুত্ব না দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। আমরা প্রতিনিয়ত জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। জনগণ সতর্ক না হলে লকডাউন বাস্তবায়ন করা কঠিন।”
পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান বলেন, “এটা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ জনগণকে সচেতন করা যাচ্ছে না। আমরা প্রাথমিকভাবে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করা হবে।”
পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার শহরের বিভিন্ন দোকানে সরকারি নির্দেশনা মানার জন্য সতর্ক করেন।
এদিকে, লকডাউন ঘোষণার পর থেকে গত দুই দিনে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তাদের মাধ্যমে আগামীতে পাবনায় করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।
পাবনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আবু জাফর বলেন, গত এক সপ্তাহে দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় পাবনার করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। সংক্রমণের হার ছিল শতকরা ২ ভাগ।
“আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, বাইরে থেকে আসা মানুষের মাধ্যমে সংক্রমিতের হার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বাইরে থেকে যারা আসছেন তারা যেন অন্তত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলেন।”
অযথা বাইরে ঘুরে সবার জন্য বিপদ ডেকে না আনার অনুরোধও জানান তিনি।