জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বেলদহ গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে তামান্না।
তারামিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার চার শতক বাড়িভিটা ছাড়া আরও কোনো সম্বল নেই। ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে কাপড় বেচে সংসার চালাই। তাই দিয়ে খেয়ে না খেয়ে চলে স্ত্রী-সন্তানসহ চারজনের সংসার।
“জমানো কোনো টাকা-পয়সা নেই। মানুষের সাহায্যে তামান্নার পড়াশোনা চলত। একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ফেরি করে কাপড়ের ব্যবসা করছি। করোনাভাইরাসের কারণে বেচাকেনা তেমন নেই। এর মধ্যে মেয়ে মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে। কিভাবে ভর্তি করাব সেই চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না।”
তামান্না এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ায় একটি এনজিওটি ২৪ হাজার টাকা বৃত্তি দিয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, বৃত্তির টাকা দিয়ে মেয়েকে কোচিংয়ে পড়ান। করোনাভাইরাসের সময় অনলাইনে ক্লাস করার জন্য মালয়েশিয়া প্রবাসী পরিচিত এক ব্যক্তি একটি মোবাইল ফোন কিনে দেন।
দুই বোনের মধ্যে বড় তামান্না।
তামান্নার মা লাইলি বেগম বলেন, “কারও সাহায্য ছাড়া মেয়েকে মেডিকেলে পড়ানো সম্ভব না। টাকার অভাবে মেয়ের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়া দেখা ছাড়া মা হিসেবে আমার আর কিছু করার নেই।”
তামান্না নিজেও এখনও কোনো উপায় দেখতে পাচ্ছে না।
“মেডিকেলে ভর্তি সুযোগ পেয়ে আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু নিমেষেই সেই অনুভূতি হারিয়ে গেছে। দারিদ্যের বাঁধা অতিক্রম করতে পারছি না। ভর্তি ও অন্যান্য খরচসহ প্রায় ৯০ হাজার টাকা লাগবে শুনেছি। এত টাকা আমাদের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব না। তাই ডাক্তার হওয়াটা দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তামান্নার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন ভূরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ খালেদুজ্জামান।
তিনি বলেন, “মেয়েটি অসম্ভব মেধাবী। কলেজে পড়ার সময় আমরা তাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছি। এমন এক প্রতিভা যেন হারিয়ে না যায় সেজন্য আমি সবাইকে সহযোগিতার অনুরোধ জানাই।”
কুড়িগ্রামের ডিসি মোহাম্মদ রেজাউল করিম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “মেডিকেলে চান্স পাওয়াটা আনন্দের সংবাদ। সে যদি সত্যি দরিদ্র হয়ে থাকে তাহলে ভর্তির জন্য যে সহযোগিতার প্রয়োজন, জেলা প্রশাসন সেটি দেখবে।”