আইপিএলে শনিবার মুম্বাইয়ে
মুখোমুখি হয় চেন্নাই সুপার কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালস। ২৬ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার টম
খেলেন দিল্লির হয়ে, চেন্নাইয়ের হয়ে ২২ বছর বয়সী বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার স্যাম।
ম্যাচের আগেই দুই ভাইয়ের
লড়াই আলোচনার খোরাক জোগায় বেশ। দুজনের লড়াইকে ঘিযে পারিবারিক আবহের ছবি কিছুটা ফুটিয়ে
তোলেন স্যাম।
“ আমি জানি, মা আজকে
রাতে বেশ নার্ভাস থাকবেন! গতবার রাজস্থানের বিপক্ষে ম্যাচের আগেও (টম তখন খেলেন রাজস্থানে)
এরকম হয়েছে। পারিবারিক হোয়াটঅ্যাপ গ্রুপে বেশ কথা চালাচালি ও মজা হয়েছে।”
“ আমি নিশ্চিত, স্লেজিং
কিছু আজকেও হবে। আশা করি, স্টাম্প মাইকে তা ধরা পড়বে না!”
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা চেন্নাইয়ের হয়ে আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন স্যাম। খানিক পরই
মুখোমুখি দুই ভাই।
তখনও পর্যন্ত দারুণ
বোলিং করছিলেন টম। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে নেন তিনি আম্বাতি রায়ডুর উইকেট।
ইনিংসের সপ্তদশ ওভারে নিজের তৃতীয় ওভার করতে এসে সামনে পান ছোট ভাই স্যামকে।
মুখোমুখি প্রথম বলে
সিঙ্গেল নেন স্যাম। দ্বিতীয় বলে বাউন্সারের তোপ দাগান টম, ছোট ভাই সম্মান দেখিয়ে ছেড়ে
দেন। পরের বল থেকেই দেখা যায় ছোট ভাইয়ের রুদ্র রূপ! লেগ স্টাম্পে বল পেয়ে দারুণ টাইমিংয়ে
চার মারেন স্যাম।
তার পরও টমের বোলিং
ফিগার ভালোই ছিল, ৩ ওভারে ১৭ রান। কিন্তু ইনিংসের ১৯তম ওভারে বড় ভাইয়ের ওপর ঝড় বইয়ে
দেন ছোট ভাই।
শুরুটা যদিও হয় রবীন্দ্র
জাদেজার ব্যাটে। প্রথম বলে তিনি বাউন্ডারি মেরে পরের বলে নেন সিঙ্গেল। এরপর বড় ভাইয়ের
ওপর নির্দয় হয়ে ওঠেন ছোট ভাই। ফুল টস পেয়ে ছক্কায় ওড়ান লং অন দিয়ে, পরের বলে বাউন্সারে
দুর্দান্ত পুল শটে ছক্কা মিড উইকেট দিয়ে।
শেষ নয় সেখানেই। ছোট
ভাইকে দমাতে এরপর স্লোয়ার করেন টম। স্যাম সেটি বুঝতে পেরে বলের জন্য অপেক্ষা করে দুর্দান্ত
টাইমিংয়ে চার মারেন কাভার দিয়ে। শেষ বলে ইয়র্কার লেংথের ডেলিভারিতে আসে সিঙ্গেল।
টম কারান ও স্যাম কারান। ছবি : টুইটার।
সব মিলিয়ে বড় ভাইয়ের
৭ বলে ছোট ভাইয়ের রান ২২!
স্যাম কারানের ১৫ বলে
৩৪ রানের ঝড় চেন্নাইকে এনে দেয় ১৮৮ রানের পুঁজি।
ম্যাচের পরের ভাগে আর
দুই ভাইকে মুখোমুখি হতে হয়নি। পৃথ্বী শ ও শিখর ধাওয়ানের উদ্বোধনী জুটিই ম্যাচের উত্তেজনা
শেষ করে দেয় অনেকটা। ৩৮ বলে ৭২ করেন পৃথ্বী, ৫৪ বলে ৮৫ ধাওয়ান। দিল্লি জিতে যায় ২ উইকেটে।
টমের ব্যাটিংয়ের প্রয়োজন পড়েনি। ২ ওভারে ২৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন স্যাম।
টম ও স্যাম জিম্বাবুয়ের
সাবেক ক্রিকেটার কেভিন ম্যালকম কারানের ছেলে। জিম্বাবুয়ের হয়ে ১১টি ওয়ানডে খেলা পেস
বোলিং অলরাউন্ডার কেভিন দক্ষিণ আফ্রিকার ও ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলেন নিয়মিত
পারফরমার। কাউন্টি খেলতে গিয়ে থিতু হন ইংল্যান্ডেই। টম ও স্যামের জন্ম-বেড়ে ওঠা, সবই
ইংল্যান্ডে। তারা এখন আপাদমস্তক ইংলিশই।
কেভিনের বাবা, টম ও
স্যামের দাদা কেভিন প্যাট্রিক কারানও ছিলেন ক্রিকেটার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেললেও
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারেননি।
টম ও স্যামের মাঝে আছেন
আরেক ভাই, বেন কারান। ২৪ বছর বয়সী বেনও ক্রিকেটার, ব্যাটসম্যান। খেলছেন কাউন্টি ক্রিকেটে
ও জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটে। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আসার মতো পারফর্ম করতে পারেননি
এখনও।