প্রেমের সম্পর্কের অনুভূতিটা দারুণ। প্রতি
মুহূর্তে উত্তেজনা, একে অপরের জন্য প্রতিক্ষা, দু্ষ্টু মিষ্টি ঝগড়া, কিছুক্ষণ পর আবার
মিল হওয়া, আবেগঘন আলাপ।
ভালোবাসার পথে এসব কিছুরই দেখা মেলে।
তবে সম্পর্ক যত পরিণত হয় ততই ধরে রাখার চেষ্টা, আত্মত্যাগ, পরস্পরের ভালো মন্দ বোঝা
ইত্যাদির চাপ বাড়ে। দুষ্টু মিষ্টি প্রেম তখনই ভালোবাসায় পূর্ণতা পায়।
সম্পর্কের এই পূর্ণতা অর্জন আর চিরস্থায়ী
করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু পন্থা জানানো হলো সম্পর্কবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন
অবলম্বনে।
সঙ্গীর মূল্যায়ন: সম্পর্ক যতই পুরানো আর পরিণত হোক না কেনো, তা ভাঙার সম্ভাবনা কখনই ফুরিয়ে
যায় না। সম্পর্কের প্রতি দুজনেরই কিছু চাহিদা থাকবে। সেই চাহিদাগুলো অপরজনের কাছে যদি
প্রাধান্য না পায়, সেগুলো পূরণ হওয়া আশা দূরাশাই রয়ে যায় তবে একদিন ধৈর্য্যের বাঁধ
ভেঙে সম্পর্কে বিচ্যুতি ঘটতে বাধ্য। আর আপনার কাছ থেকে সঙ্গীর যে চাওয়াগুলো পূরণ হচ্ছে
না অন্য কারও কাছে তা পাওয়া যেতেই পারে। তাই দুজনেরই উচিত সঙ্গীর চাহিদাগুলোর দিকে
মনযোগ দেওয়া, তাকে মূল্যায়ন করা।
যত্নে কমতি নয়: সম্পর্কের প্রথম দিনগুলো নিজেদের মধ্যে যে ভালোবাসা ছিল, কয়েক বছর পর সেই
ভালোবাসায় চেহারায় পরিবর্তন আসবে, হয়ত ভালোবাসার মাত্রাও কমবে। তবে পরস্পরের প্রতি
সহানুভূতি, শ্রদ্ধা, যত্ন এই অনুভূতিগুলো কখনই কমতে দেওয়া যাবে না। সম্পর্ক পুরানো
হয়েছে বলেই সঙ্গীকে কটাক্ষ করা মোটেই ঠিক হবে না। তাই প্রথম দিকে সঙ্গীর যে বিষয়গুলোকে
ভালোবেসে তার প্রসংশা করতেন, আজও সেই প্রসংশাগুলো তার সামনে প্রকাশ করতে হবে।
নিঃস্বার্থ হওয়া: সকল ভালোবাসার সম্পর্কের নেপথ্যেই থাকে নিজেদের প্রয়োজনগুলো মেটানো। শুধু
নিজের নয়, নিজেদের। ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ দুজন মানুষ হবে একে অপরের পরিপূরক। আর একে
অপরের খেয়াল রাখাটা যতদিন খুশি মনে করে যাবেন, ততদিন ভালোবাসাও বেঁচে থাকবে। আর সঙ্গীর
যত্ন নেওয়া, তার প্রয়োজনগুলো মেটানো যেদিন অনীহা আসবে, সম্পর্কের ধ্বংস শুরু হবে সেদিন
থেকেই।
ঝগড়ায় বিষয় হোক একটাই: দুটি মানুষ একত্র হলে মত বিরোধ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে এই মত
বিরোধগুলো চেপে রাখলে নেতিবাচকতা বাড়তে থাকবে। এমন একাধিক মতবিরোধ নিয়ে একসঙ্গে ঝগড়া
বাঁধলে তার সুষ্ঠু মীমাংসায় আসা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তাই সঙ্গীর কোনো আচরণ যদি সইতে না
পারেন তবে দ্রুত তা নিয়ে আলোচনা করা উচিত। আর ঝগড়া যখন বাঁধবে তখন যে কারণে বেঁধেছে
সেটাতেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। পুরানো গল্প টেনে আনলে ঝগড়া বড়ই হবে, সমাধান আসবে না।
ধন্যবাদ দিন:
পরস্পরের আত্মত্যাগগুলো চিহ্নিত করে তার জন্য সঙ্গীকে ধন্যবাদ দেওয়ার মন মানসিকতাকে
সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। একইভাবে সঙ্গীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশগুলোর
জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো সুযোগ কখনই অবহেলা করা উচিত হবে না।
দায়বদ্ধতা শুধুই নিজেদের প্রতি: লোকের কথায় কান দেওয়া একটি সম্পর্কের জন্য সবচাইতে ধ্বংসাত্মক
বিষয়। আশপাশের মানুষ আপনাদের সম্পর্ক নিয়ে কী ভাবছে, লোকে কী বলবে এসব নিয়ে অতিরিক্ত
চিন্তিত না হয়ে, দুজন সম্পর্ক থেকে কী চান সেদিকে মনযোগ দিতে হবে।
দুজনের মিলিত স্বপ্ন: প্রতিটি মানুষেরই জীবনের কিছু লক্ষ্য থাকা উচিত। আর যার সঙ্গে
সারাজীবন সংসারের কথা ভাবছেন তার সঙ্গে জীবনের লক্ষ্যগুলোও ভাগাভাগি করা বুদ্ধিমানের
কাজ হবে। জীবনে কোনো কিছু অর্জনের স্বপ্নটা তাই নিজস্ব নয়, দুজনের মিলিত স্বপ্ন হওয়া
উচিত।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন