এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান করোনাভাইরাস
মহামারীতে ইতোমধ্যে এর সংক্রমণের প্রধান লক্ষণগুলো সবার জানা।
তবে করোনাভাইরাসও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে
তার রূপ পরিবর্তন করেছে কয়েকবার। ফলে নতুন কিছু উপসর্গও দেখা দিচ্ছে। যা আগে এই ভাইরাসে
আক্রান্তদের মাঝে দেখা যেত না।
ভাইরাসের ছোবল থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি
ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পাশাপাশি করোনাভাইরাসের নতুন ও পুরানো উপসর্গ সম্পর্কে
জানা থাকা দরকার।
এতে নিজে সাবধান থাকার পাশাপাশি অপরকেও
সাবধান করতে পারবেন। আর সম্ভাব্য সংক্রমন টেরও পাওয়া যাবে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রকাশিত
প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হলো করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন কিছু উপসর্গ সম্পর্কে।
চোখের প্রদাহ:
‘কনজাংটিভাইটিস’ বা চোখ ওঠাকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ বলে দাবি করছে চীনের সাম্প্রতিক
গবেষণা। চোখ ওঠার সমস্যায় চোখ লাল হয়, জ্বলুনি হয়, ফুলে যায়, পানি পড়ে এবং প্রচুর ময়লা
জমে চোখ খুলতে কষ্ট হয়।
চীনের ওই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে
১২ জন করোনাভাইরাসের নতুন ‘স্ট্র্যান্ড’য়ে আক্রান্ত হন আর সবার মাঝেই চোখের এই প্রদাহ
দেখা দেয়। এদের মধ্যে ১১ জনের নাক থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা করে দেখা যায় ‘করোনা
পজিটিভ’।
অন্য দুজন ব্যক্তির নাক ও চোখ থেকে নমুনা
সংগ্রহ করা হয় এবং দুই নমুনাই ‘করোনা পজিটিভ’ পাওয়া যায়।
চোখের মাধ্যমেও যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ
হওয়া সম্ভব সেটা জোরালোভাবে প্রমাণীত হয় এই গবেষণার মাধ্যমে। আর সেখান থেকে ফুসফুসে
পৌঁছাতেও পারে।
তবে শতভাগ নিশ্চিত হতে এ বিষয়ে আরও পর্যবেক্ষণের
প্রয়োজন আছে বলে স্বীকার করেন গবেষকরা।
শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া: তীব্রমাত্রায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের একটি উপসর্গ হল শ্র্রবণশক্তি
হ্রাস পাওয়া।
‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অডিওলজি’তে
প্রকাশিত এক গবেষণা্ এমনটা দাবি করে।
এছাড়াও এক কান কিংবা দুই কান থেকেই শব্দ
শুনতে পাওয়াও কোভিড-১৯ সংক্রমণের লক্ষণ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘টিনিটাস’।
বাহ্যিক কোনো শব্দ নয়, কানের ভেতর থেকেই
অনবরত কোনো শব্দ আসছে এমনটা মনে হয়, যা আর কেউ শুনতে পায়না স্বভাবতই। পরিসংখ্যান বলে,
করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত ৭.৬ শতাংশ সাময়িক শ্রবণশক্তি হারান।
পেটের গোলমাল:
করোনাভাইরাস যেহেতু শ্বাসতন্ত্রকে আক্রান্ত করে, তাই এর সঙ্গে পেটের গোলমালের কোনো
সম্পর্ক থাকতে পারে সেটা ভাবতে না পারাই স্বাভাবিক।
তবে অনেক রোগীর মাঝেই ডায়রিয়া ও বমির
সমস্যা দেখা গেছে। তাই এই সময় বমি ও ডায়রিয়াকে অবহেলা না করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
আর শুধু শ্বাসতন্ত্রেই নয়, বৃক্ক, যকৃত ও অন্ত্রেরও ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে এই ভাইরাস।
শারীরিক দুর্বলতা ও আলসেমি: করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়
শারীরিক দুর্বলতা ও আলসেমিকে। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রায় সবাই প্রচণ্ড ক্লান্তি
ও অবসাদ অনুভব করেন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই।
এর কারণ হিসেবে চিকিৎসকদের সম্ভাব্য ধারণা
‘সাইটোকাইনস’য়ের উপস্থিতি। এই উপাদান তৈরি হয় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে কোনো
না কোনো জীবাণুকে ধ্বংস করার মাধ্যম হিসেবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন সেই জীবাণুর বিরুদ্ধে
লড়তে ব্যস্ত, শরীর তখন ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ে।
আরও পড়ুন