সংক্রমণ এড়াতে কঠোর ‘লকডাউন’ শুরুর
আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সোমবার ৮৩ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে, যা এই যাবৎ সর্বোচ্চ
সংখ্যা। এ নিয়ে টানা তিন দিন মৃত্যুর একের পর এক রেকর্ড হয়েছে।
এর আগে শনিবার ৭৭ মৃত্যুর রেকর্ড গড়ার
পরদিন রোববারই ৭৮ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সোমবার সেই
সংখ্যাও ছাড়িয়ে গেল।
গত ৩১ মার্চ ৫২ জনের মৃত্যুর খবর দেয়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর থেকে দৈনিক মৃত্যু কখনোই ৫০ এর নিচে নামেনি। বরং বাড়তে
বাড়তে এই প্রথম ৮০ ছাড়াল।
দেশে এনিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল
৯ হাজার ৮২২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত ২৪ ঘণ্টায় ৭
হাজার ২০১ জন নতুন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের খবর জানিয়েছে ।
গত কয়েক দিন ধরেই দিনে ৬ হাজারের বেশি
রোগী শনাক্ত হয়ে আসছিল। এর মধ্যে গত বুধবার রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী
শনাক্ত হয়েছিল। মাঝে খানিক কমলেও নতুন রোগীর সংখ্যা আবার ৭ হাজার ছাড়াল।
সব মিলিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা
দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৯৫৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত
২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছেন ৪ হাজার ৫২৩ জন। তাদের নিয়ে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা
দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৮১ হাজার ১১৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায়
শনাক্তের হার ছিল ২০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর সর্বমোট নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের
হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪
ঘণ্টায় সারা দেশে ২৫৫টি ল্যাবে ৩৪ হাজার ৯৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত
পরীক্ষা হয়েছে ৫০ লাখ ৩৭ হাজার ৮৩৩টি নমুনা।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৩
দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী,
সোমবার নাগাদ টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন ৭০ লাখ ৫৬ হাজার ৩৭২ জন। এর মধ্যে প্রথম
ডোজ নিয়েছেন ৫৬ লাখ ২৭ হাজার ১০৭ জন। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩ লাখ ৮৩ হাজার
৭১৭ জন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম
সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ; তা ৬ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১ এপ্রিল।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত
বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ৩১
মার্চ তা ৯ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তালিকায়
বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৯তম
অবস্থানে।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের
মধ্যে ৫৪ জন পুরুষ আর নারী ২৯ জন। তাদের মধ্যে ৫ জন বাড়িতে, ৪ জন হাসপাতালে আনার
পথে মারা গেছেন। বাকিদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।
মৃতদের মধ্যে ৫২ জনের বয়স ছিল ৬০
বছরের বেশি, ১৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং ৪ জনের
বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৫৪ জন ঢাকা বিভাগের, ১৭
জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৪ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন বরিশাল
বিভাগের এবং ১ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৯ হাজার ৮২২
জনের মধ্যে ৭ হাজার ৩৩৩ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ৪৮৯ জন নারী।