তার দোকানে মূলত নারী ও রূপান্তরিত নারীদের পোশাক তৈরি করা হয়। এই দোকান খোলার মধ্য দিয়ে সমাজের ট্যাবু ভেঙে বেরিয়ে এসে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান ৩৫ বছরের জিয়া।
পাকিস্তানে তৃতীয়লিঙ্গের কিছু কিছু মানুষ দর্জির কাজ করলেও তারা তা বাড়িতে বসে করেন। দেশটির রক্ষণশীল সমাজ তাদের মেনে নেবে কিনা তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন থাকেন। জিয়া সেই ট্যাবু ভেঙে বেরিয়ে এসেছেন।
যদিও নিউ মার্কেটে একটি দোকান পেতে জিয়াকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। পাকিস্তানে দোকান মালিকরা সাধারণত তৃতীয়লিঙ্গের মানুষ বা রূপান্তরিত নারীদের দোকান ভাড়া দিতে চান না।
রমজান মাস আসন্ন, তারপরই মুসলমানদের সবথেকে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ। পাকিস্তানে ঈদে কেনাকাটা অনেক বেড়ে যায়। ঈদে সবার নতুন পোশাক চাই। এসময় দর্জিদেরও কাজের চাপ এবং ব্যবসা থাকে রমরমা। ব্যবসার জন্য সময়টি অতুলনীয়। তাই দোকান খোলার জন্য এই সময়টাকেই বেছে নিয়েছেন জিয়া।
জিয়া লেখাপড়া করেছেন ছেলেদের স্কুলে। তিনি সেলাইয়ের কাজ শিখেছেন তারই মত রূপান্তরিত নারীদের কাছ থেকে।
নিজের ব্যবসা নিয়ে দূরদর্শী জিয়া বলেন, ব্যবসা ভালো হলে এরপর তিনি একটি বুটিকের দোকান দিতে চান। যেখানে দেশী কাপড়ের পাশাপাশি থাকবে পশ্চিমা কাপড়।
রূপান্তরিত নারী ক্রেতাদের পাশাপাশি জিয়ার অনেক ক্রেতাই নারী। তিনি বলেন, বেশিরভাগ দর্জিই পুরুষ হওয়ায় অনেক নারী তার মত মানুষদের কাছে কাপড় বানাতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
জিয়ার ক্রেতা ফারজানা জাহিদ বলেন, “জিয়া যখন কাপড় বানানোর জন্য আমার মাপ নেয় তখন আমার একদমই অস্বস্তি হয় না।”
পাকিস্তান সরকার ২০১৮ সালে তৃতীয়লিঙ্গের মানুষদের স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের বেশ কিছু মৌলিক অধিকারও দেওয়া হয়েছে। যেমন: নিজের লিঙ্গ নির্বাচন করা, ভোটাধিকার ইত্যাদি।
২০১৭ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী পাকিস্তানে ১০ হাজার তৃতীয়লিঙ্গের মানুষ আছে। যদিও পাকিস্তানের তৃতীয়লিঙ্গ অধিকার সংস্থাগুলো দাবি, ২২ কোটি মানুষের ওই দেশে আছে প্রায় তিন লাখ তৃতীয়লিঙ্গের মানুষ।