রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে মোট শয্যা থাকছে এক হাজার।
এরমধ্যে ভবনের পুরো একটি ফ্লোর জুড়ে থাকবে ২১২ শয্যার কোভিড আইসিইউ ইউনিট।
এছাড়া ২৫০ শয্যার কোভিড এইচডিইউ এবং ৫০ শয্যার জরুরি বিভাগ থাকছে।
শনিবার ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোববার থেকে চালু হতে যাওয়া এ হাসপাতাল মহামারী শেষে সিটি করপোরেশনের জেনারেল হাসপাতাল হিসেবে পরিচালিত হবে। সেখানে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।
এই হাসপাতাল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে। এটি পরিচালনায় থাকছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
রোববার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই হাসপাতালের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
এই হাসপাতালের জমি, ভবন, বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা করছে ডিএনসিসি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতালের যন্ত্রপাতি, লোকবল, ওষুধসহ অন্যান্য কারিগরি সহায়তা দেবে।
মহামারীর সময় এটি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেবে। মহামারী শেষ হলে এটি জেনারেল হাসপাতাল হিসেবে পরিচালিত হবে।
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন শনিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, রোববার ২৫০ শয্যা নিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে। ৫০টি আইসিইউ, ৫০টি কোভিড ইমার্জেন্সি ও ১৫০টি কোভিড আইসোলেটেড রুম থাকবে শুরুতে।
পর্যায়ক্রমে পুরো হাসপাতালের কার্যক্রম চালানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইনশাআল্লাহ তা ৫০০ শয্যায় রূপান্তর করতে পারব। এই মাসের শেষে আমরা পুরো হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করবো। ওই সময়ের মধ্যে এক হাজার শয্যাই রেডি হয়ে যাবে।”
তিনি জানান, হাসপাতালের জন্য ৪০০ জন চিকিৎসক, ৭০০ জন নার্স এবং ৬০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জনবল চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৫০ জন চিকিৎসক, ২০০ জনের মতো নার্স এবং ৩০০ জন কর্মচারী যোগ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী এই হাসপাতাল পরিচালনা করবে।
“এ কারণে আর্মি, নেভি, এয়ারফোর্সের দেড়শ জনের ওপরে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারী হাসপাতালে যোগ দেবেন।”
মহাখালীতে সাত দশমিক ১৭ একর জমিতে তৈরি ডিএনসিসির একটি বিপণীবিতানকে হাসপাতালে রূপান্তর করা হচ্ছে। এটির আয়তন এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট।
এই বিপণীবিতান তৈরি করা হয়েছিল কারওয়ান বাজারের আড়ত সরিয়ে আনতে। তবে ব্যবসায়ীরা না আসায় এটি খালি পড়েছিল।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকলে ২০২০ সালে সেখানে গড়ে তোলা হয় এক হাজার শয্যার আইসোলেশন সেন্টার, যা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।
গত বছরের ৯ অগাস্ট আইসোলেশন সেন্টার পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, এই মার্কেটকে একটি জেনারেল হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
শনিবার ডিএনসিসির মেয়র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখানে দোকান বরাদ্দ থেকে বছরে একশ কোটি টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে নগরবাসীকে সেবা দিতে এটিকে হাসপাতালে রূপান্তর করা হচ্ছে।
“এই ভবন মার্কেটের জন্য করা হয়েছিল। সেখানে হাসপাতাল করতে হলে কিছুটা পরিবর্তন করা হচ্ছে। এটা পিলারের ওপর করা। কিছু জায়গা ভেঙ্গে ঠিক করা হচ্ছে। এজন্য আমাদের প্রকৌশলীরাও কাজ করছেন”বলেন আতিকুল ইসলাম।
দেশে মার্চ থেকে আবার সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় ঢাকার হাসপাতালগুলোয় সিট পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে কোনো আইসিইউ শয্যা ফাঁকা থাকছে না বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন
কোভিড-১৯: ঢাকার পাঁচ হাসপাতালকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ
ডিএনসিসি মার্কেটের আইসোলেশন সেন্টার চালাবে সেনাবাহিনী